Thank you for trying Sticky AMP!!

ভাসানচরের উদ্দেশে ৮ শতাধিক রোহিঙ্গার যাত্রা

কক্সবাজারের উখিয়া থেকে আজ বুধবার বেলা দেড়টার দিকে ১৬টি বাসে করে ৮ শতাধিক রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছে

‘চল চল চল, ভাসানচর চল’ স্টিকারযুক্ত ১৬ বাসে করে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ রোহিঙ্গা শিবির থেকে ষষ্ঠ দফায় (দ্বিতীয় দিনের প্রথম অংশে) ৮৮৩ জন ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করেছে। এই দফায় সাড়ে চার হাজারের মতো রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

আজ বুধবার বেলা দেড়টার দিকে ১৬টি বাসে করে ৮ শতাধিক রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বাসগুলো উখিয়া থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ২ হাজার ৯৮২ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে চট্টগ্রামের বিএন শাহীন কলেজের ট্রানজিট ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। তবে সাগর উত্তাল থাকায় আজ বেলা দুইটা পর্যন্ত রোহিঙ্গারা চট্টগ্রামে আছে। এখনো ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হয়নি। আজ বিকেলে আরও কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গার ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রামের দিকে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ শামসু-দ্দৌজা বলেন, আজ বেলা দেড়টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে চট্টগ্রামের পথে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে ১৬টি বাস। এর আগে সোমবার বিকেলে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির থেকে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে আনা হয়।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ৪ ও ২৯ ডিসেম্বর ৩ হাজার ৪৪৬ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। এরপর ২৯ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপের প্রথম অংশে ১ হাজার ৭৭৮ জন এবং ৩০ জানুয়ারি দ্বিতীয় অংশে ১ হাজার ৪৬৩ জনকে ভাসানচরে নেওয়া হয় এবং চতুর্থ দফায় ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি দুই দলে ৩ হাজার ২০ জন পৌঁছায় সেখানে। গত ২ ও ৩ মার্চ ষষ্ঠ দফায় ৪ হাজার ১৬ জনসহ বর্তমানে স্থানান্তরিত ১৩ হাজার ৭২৩ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে বসবাস শুরু করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে রোহিঙ্গারা আতঙ্কিত। অনেকেই ভাসানচরে চলে যেতে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য ভিড় করছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে আশ্রয় নেওয়াসহ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে বাস করছে। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার। এরই অংশ হিসেবে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।