Thank you for trying Sticky AMP!!

ভোর থেকেই দৌলতদিয়ায় যানবাহন ও মানুষের চাপ

বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের চাপ রয়েছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে। আজ শুক্রবার ভোরে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায়।

করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ শুক্রবার থেকে সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই ঈদ করতে গ্রামে যাওয়া মানুষ এখনো ফিরছেন।

বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ভোর থেকেই সাধারণ যাত্রী এবং বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের চাপ রয়েছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে। বিশেষ করে ছোট বা ব্যক্তিগত গাড়ি লম্বা লাইন দিয়ে ফেরিতে ওঠার অপেক্ষা করছে। একইভাবে নদী পাড়ি দিয়েও মানুষ আসছেন। তবে সকাল ছয়টার পর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।


শুক্রবার সকালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে পণ্যবাহী গাড়ির লম্বা লাইন রয়েছে। আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে আসা বিভিন্ন ধরনের দুই শতাধিক গাড়ি ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায়। বিকল্প সড়কের ৫ নম্বর ফেরিঘাটের মাথায়ও ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে ব্যক্তিগত গাড়ির লম্বা লাইন। দৌলতদিয়া ঘাট ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ফেরিতে আগের দিন রাতে আটকে থাকা দূরপাল্লার নৈশ কোচ, পণ্যবাহী গাড়ি, ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল এবং শত শত যাত্রী উঠছে।

বিপরীত দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতেও বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের সঙ্গে শত শত যাত্রী পার হয়ে আসতে দেখা যায়। সবকিছু দেখে মনে হয়, বিধিনিষেধের কোনো ছোঁয়া নেই। তবে সবার ভেতর একধরনের অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছিল। বিধিনিষেধের আগে যেভাবেই হোক বাড়ি পৌঁছাতে হবে। কেউ কেউ টানা বিধিনিষেধে শহর ছেড়ে নিজ গ্রামে পরিবারের সঙ্গে থাকতে ছুটে আসছেন। এ ছাড়া সকাল ছয়টার পর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। অনেকে লঞ্চঘাটে গিয়ে বন্ধ পাওয়ায় তাঁরা ফেরিতে নদী পাড়ি দিচ্ছেন।

ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সোয়েব রহমান ঈদ করেন ঢাকায়। পুনরায় কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হওয়ায় অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি কাজগুলো বাসায় বসে করা যাবে। তাই তিনি আর শহরে থাকতে চান না। শুক্রবার সকালে ফেরিঘাটে আলাপকালে তিনি বলেন, যেহেতু অফিসের কাজ বাসায় বসে করা যাবে, তাই দেরি না করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খুব ভোরেই তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী ছুটছেন। বিধিনিষেধ ছাড়ার পর তিনি ঢাকায় ফিরবেন বলে জানান। তাঁর মতো এ রকম অনেকেই ঢাকায় না থেকে গ্রামের বাড়ি ছুটছেন।

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থেকে সাভার যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, সাভারে এক নিকটাত্মীয় অসুস্থ হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেকটা বাধ্য হয়েই তাঁকে সাভার যেতে হচ্ছে। এ জন্য তিনি আজ খুব সকালেই রওনা হয়েছেন।

আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার তত্ত্বাবধায়ক নুরুল আনোয়ার বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ছয়টার পর থেকে কোনো লঞ্চ ছাড়া হয়নি। তার আগে ঘাটে আসা যাত্রীদের দ্রুত লঞ্চে তুলে দিয়ে ঘাট ছাড়া হয়। পরে ঘাটে আসা যাত্রীদের লঞ্চের পরিবর্তে ফেরিতে নদী পাড়ি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ অ্যভন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের ট্রাফিক পরিদর্শক আফতাব উদ্দিন বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা সংক্রমণ রোধে শুক্রবার সকাল ছয়টার পর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া, আরিচা-কাজিরহাট, আরিচা-নগরবাড়ী নৌপথে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।


বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ফেরি চলবে। তবে ফেরিগুলো সীমিত পরিসরে চালানো হবে। জরুরি রোগী, রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত গাড়ি এবং পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার করতেই সীমিত পরিসরে ফেরি চলবে। সাধারণ যাত্রী পারাপার নিষেধ থাকলেও কেউ যদি ফেরিতে উঠে পড়ে, এ ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হবে না বলে তিনি জানান।