Thank you for trying Sticky AMP!!

মধুমতী নদীর ভাঙনের মুখে আবদুর রউফ স্মৃতি জাদুঘর

এক মাসে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ সংগ্রহশালার দক্ষিণে প্রায় ২৫০ মিটার জমি বিলীন হয়েছে। সংগ্রহশালা থেকে ভাঙনের দূরত্ব প্রায় দেড় শ মিটার।

বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ স্মৃতি জাদুঘরের পেছনের অংশে মধুমতী নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ফরিদপুরের মধুখালীর কামারখালীতে

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালীতে মধুমতী নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালাটি। ওই সংগ্রহশালার দেড় শ মিটারের মধ্যে চলে এসেছে মধুমতী নদীর ভাঙন। ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে কামারখালী ইউনিয়ন বাজার থেকে বীরশ্রেষ্ঠের বাড়ি ও সংগ্রহশালায় যাওয়া সড়কের বিভিন্ন অংশ।

গত এক মাসের মধ্যে ইউনিয়নের গন্ধখালী এলাকায় কামারখালী-রউফনগর সড়কের ৩০০ মিটার এবং বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ সংগ্রহশালার পেছনে দক্ষিণ দিকে ২৫০ মিটার অংশ বিলীন হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে এসব এলাকার প্রায় পাঁচ একর ফসলি জমি ও তিনটি বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে।

বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালার গ্রন্থাগারিক মুন্সী সাইদুর রহমান (৩২) বলেন, সড়ক ভেঙে যাওয়ায় দর্শনার্থীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। দ্রুত এ ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

রউফনগর এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নদী ও স্মৃতি সংগ্রহশালা এলাকায় ৮ থেকে ১০টি পুকুর আছে। নদীর পানি নেমে গেছে। ওই পুকুরের পানি চুইয়ে নদীতে যাওয়ায় এ সংগ্রহশালার দক্ষিণে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত ওই পুকুরগুলো ভরাট করা প্রয়োজন।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গন্ধখালী এলাকার ভাঙন রোধে গত জুন মাসে প্রায় ৬০ লাখ টাকায় ৪৫ মিটার অংশে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়। ইতিমধ্যে তা ধসে আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গন্ধখালী এলাকা ও রউফনগরে গিয়ে দেখা যায়, মধুমতী নদীর পাড়ে বড় বড় ফাটল ধরছে। সে ফাটল বিস্তৃত হয়ে ভেঙে পড়ছে। ভ্যান, মোটরসাইকেলের মতো যানবাহন সড়কের পাশের একটি বাগানের মধ্য দিয়ে চলাচল করছে।

রউফনগরের বাসিন্দা মিরাজ খাঁ (৫২) বলেন, তাঁর বাড়ির অর্ধেক অংশে ফাটল ধরেছে। যেকোনো মুহূর্তে তা নদীগর্ভে চলে যাবে। টাকার অভাবে বাড়িটি সরিয়ে নিতে পারছেন না তিনি।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুন্সী আবদুর রউফের বোন জোহরা বেগমসহ এলাকার পাঁচ ব্যক্তি ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে গত সোমবার ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের উপস্থিতিতেই জেলা প্রশাসক পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে নদী ও সংগ্রহশালার মাঝের পুকুরগুলো ভরাট করে দিতে বলেন। কিন্তু পরে পানি উন্নয়ন বোর্ড সে কাজ করেনি।

জোহরা বেগম (৫৯) বলেন, এখন ভরসা প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কাছে আবেদন, সংগ্রহশালা রক্ষায় তিনি যেন পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।

তবে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, ১৪ কিলোমিটার নদীর পাড় সংরক্ষণ করার জন্য ৯৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব বর্তমানে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আছে। তারা উদ্যোগী হলে ওই প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনের মাধ্যমে একনেকে নেওয়া সম্ভব। একনেকে গেলে সংগ্রহশালার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসবে। তখন প্রকল্পটি অনুমোদনের সম্ভাবনা আছে।

ফরিদপুর-১ আসনের সাংসদ মনজুর হোসেন বলেন, প্রকল্পটি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে। এ ব্যাপারে যা করণীয় সব করা হবে।