Thank you for trying Sticky AMP!!

মধ্যরাতে সাহ্‌রি নিয়ে পথে নামেন তরুণেরা

একটি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শ্রমিক ও হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা

রিকশাচালকদের হাতে বিনা মূল্যে সাহ্‌রি তুলে দেন তহুরা-আজিজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক। গত রোববার দিবাগত রাতে পাবনার আবদুল হামিদ সড়কে

দিনে চলে কেনাকাটা, সন্ধ্যায় রান্না, আর রাতে তৈরি করা খাবার বিতরণ। পবিত্র রমজান মাসজুড়ে এভাবেই চলছে পাবনার তহুরা-আজিজ ফাউন্ডেশনের সাহ্‌রি বিতরণ কার্যক্রম। রাত ১২টার পর খাবার বিতরণের জন্য শহরের রাস্তায় নামেন ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকেরা। খাবার বিতরণ করা হয় শ্রমিক, রিকশাচালক, হাসপাতালের রোগীর স্বজনদের মধ্যে।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক দেওয়ান মাহবুব একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করেন। খাবার বিতরণের কাজে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই তহুরা-আজিজ ফাউন্ডেশন বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে তারা এ কার্যক্রমে ভিন্নতা আনে। করোনায় মৃত ব্যক্তিকে দাফন, কর্মহীন ব্যক্তিদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, ঈদের আগে ঈদসামগ্রী এবং মাংস বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।

এরই ধারাবাহিকতায় চলতি রমজান মাসে বিনা মূল্যে সাহ্‌রি বিতরণের উদ্যোগ নেয়। ৫ রমজান থেকে শুরু হয় তাদের এ কার্যক্রম। প্রতি রাতে ফাউন্ডেশনের সদস্যরা খাবার রান্না করে ২৫০ থেকে ৩০০ জন মানুষের মধ্যে বিতরণ করেন। খাবারের পদেও থাকে ভিন্নতা। একেক রাতে থাকে বিরিয়ানি, মুরগির মাংস, গরুর মাংস, ডিম-সবজি।

গত রোববার রাতে ফাউন্ডেশনের সদস্যদের সঙ্গে ঘুরে খাবার বিতরণ কার্যক্রম দেখেন এই প্রতিবেদক। পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে সে রাতে রান্না করা হয় পোলাও-মাংস। রাত ১২টার দিকে সে খাবার প্যাকেট করা হয়। এরপর অটোরিকশা নিয়ে শহরের সড়কে বের হন স্বেচ্ছাসেবকেরা।

বিভিন্ন সড়কে রিকশাচালক থেকে শুরু করে মাছ বিক্রেতাদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। একসময় স্বেচ্ছাসেবকেরা যান পাবনার জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি থাকা রোগীর স্বজনদের মধ্যে খাবার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ওই রাতের কার্যক্রম।

কথা হয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য তৌহিদুর রহমান, রাইসুল ইসলাম, শওকত হোসেন, মাশফিক মাহমুদ ও আহম্মেদ শরিফের সঙ্গে। তাঁরা বলছিলেন, খাবার পেয়ে মানুষের মুখের হাসি দেখেই তাঁদের শ্রম সার্থক বলে মনে হয়।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক দেওয়ান মাহবুব জানান, ২০১১ সালে তাঁর মা–বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত হয় তহুরা-আজিজ ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সপ্তাহে তিন দিন ফাউন্ডেশন থেকে বিনা মূল্যে দরিদ্র মানুষের মধ্যে চিকিৎসাপত্র ও ওষুধ দেওয়া হয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি সেবামূলক আরও কিছু কাজ শুরু হয়। ফাউন্ডেশনের নিজস্ব অর্থের পাশাপাশি জেলা শহরের হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহায়তায় এসব খরচ বহন করা হয়।