Thank you for trying Sticky AMP!!

মহাপরিচালকের দায়িত্ব ছাড়লেন আহমদ শফী

হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় বুধবার ছাত্ররা বিক্ষোভ করেন। পরে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে

চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালকের দায়িত্ব ছাড়লেন শাহ আহমদ শফী। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার শুরা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
শুরা কমিটির সদস্য সালাউদ্দীন নানুপুরী রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। গত বুধবার শুরা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এ ছাড়া মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক নুরুল ইসলামকে মাদ্রাসার সব কার্যক্রম থেকে আজীবনের জন্য অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সালাউদ্দীন নানুপুরী বলেন, বয়স্ক ও অসুস্থ হওয়ায় মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্বভার শুরা কমিটির ওপর ন্যস্ত করেন। কমিটি মাদ্রাসা পরিচালনা করবে। প্রয়োজনে তাঁরাই পরিচালক নির্ধারণ করবেন। পরে শুরা কমিটি আহমদ শফীকে সম্মানিত পরিচালক হিসেবে রাখে।
বৈঠকে অসুস্থ আহমদ শফীকে হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া উপস্থিত শুরা সদস্যরা মাদ্রাসায় অবস্থান করবেন। দাবি পূরণ হওয়ায় রাতে মাদ্রাসার ছাত্ররা তাঁদের আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

হেফাজতে ইসলামের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এ​ মাদ্রাসায় গত বুধবার থেকে ছাত্ররা বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই দিন তাঁরা আনাস মাদানীসহ কয়েকজন শিক্ষকের কক্ষ ভাঙচুর করেন। তখন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহীকে মাদ্রাসার ভেতরে পেয়ে মারধর করেন ছাত্ররা। তিনি আনাসের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন প্রচারপত্র বিলি করা হয়। তাতে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি, আনাস কর্তৃক অব্যাহতি দেওয়া তিনজন শিক্ষককে পুনর্বহাল, তাঁর নিয়োগ করা সব শিক্ষককে ছাঁটাই, ছাত্রদের হয়রানি বন্ধ, শুরা কমিটির সদস্য আবদুল কুদ্দুস, নুরুল আমীন, আবুল কাসেম ফেনীসহ বিতর্কিতদের বাদ দেওয়া এবং একজন দক্ষ আলেমকে মাদ্রাসার পরিচালক নিয়োগ করার দাবি করা হয়। ছাত্রদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে বুধবার রাতে জরুরি মাদ্রাসার শুরা কমিটির বৈঠক ডাকেন শাহ আহমদ শফী। রাত সাড়ে ১০টায় বৈঠক শেষে শুরা কমিটির সদস্য মাওলানা নোমান ফয়েজী প্রথম আলোকে জানান, শুরা কমিটির সভায় আনাস মাদানীকে অব্যাহতির ঘোষণা দেওয়া হয়। আনাস হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক। এরপর গতকাল দ্বিতীয় দিন আবার বিক্ষোভ হয়।

ছাত্রদের বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিনে মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ থেকে শর্ত ভঙ্গ করায় এ বিষয়ে আদেশ জারি করা হয়। তাতে বলা হয়, পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসাটি বন্ধ থাকবে।
আনাস মাদানীকে অপসারণসহ ছয় দফা দাবিতে বৃহস্পতিবারও সেখানে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্ররা। মাদ্রাসায় ১০ জন শিক্ষকের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। বিক্ষোভকারীরা আনাস মাদানীর অপসারণের দা​বিতে স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁরা মাদ্রাসার মূল ফটক বন্ধ রেখে ভেতরে বিক্ষোভ করেন। বাইরে র‍্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হাসান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত। অপ্রীতিকর যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।