Thank you for trying Sticky AMP!!

মাঠের হাসি বাজারে বিলীন

সরকারের নির্দেশ থাকার পরও রংপুরের তারাগঞ্জে সরকারিভাবে ধান-চাল কেনা শুরু হয়নি। এ কারণে ধানের দাম কমে যাচ্ছে। সংসারের প্রয়োজন মেটাতে বাধ্য হয়ে কৃষকেরা কম দামে ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী গত ২৫ এপ্রিল থেকে ধান ও চাল কেনা শুরু হওয়ার কথা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ৭ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলনও ভালো। ফলন ভালো হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। কারণ, এক বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করে কৃষকের ৪ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তারাগঞ্জে ২৬ টাকা কেজি দরে ২৪৫ মেট্রিক টন ধান, ৩৬ টাকা কেজি দামে ২ হাজার ৩৭৯ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৫ এপ্রিল থেকে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান ও চালকল মালিকদের কাছ থেকে সরকার চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু তারাগঞ্জে গতকাল রোববার পর্যন্ত ধান-চাল কেনা শুরু হয়নি। ধান-চাল কেনা শুরু না হওয়ায় উপজেলায় ধানের দাম কমে গেছে।

লক্ষ্মীপুরের মাঠে গরুর জন্য ঘাস কাটছেন মণ্ডলপাড়া গ্রামের কৃষক আনছার আলী (৪২)। ধান বিক্রি করেছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘ভাই মোর খুবেই বিপদ। গরু চারটার খুরা রোগ হইছে। বড় ছেলেটার জ্বর ধরছে। চার দিন থাকি মোর স্ত্রীর কোমরের ব্যথা। হাতোত টাকা নাই। ওমার ওষুধ কিনবার জন্যে ধান বেচার নাগেছে। কিন্তুক তারাগঞ্জে খাদ্যগুদামে ধান-চাল না নেওয়ায় বাজারোত ধানের দাম পড়ি গেইছে।’

পোদ্দারপাড়া গ্রামের কৃষক মজিবার রহমানের এক বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে ধান চাষ করেত সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। ধান তোলার পর বিক্রি করতে গিয়ে হিসাব মিলছে না তাঁর। সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু না হওয়ায় তিনি বাজারে প্রতি মণ (২৮ কেজি) ধান ৩০০ টাকা দরে গতকাল ইকরচালী বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন। এতে তাঁর এক বিঘা জমির ধান চাষ করে লোকসান হয়েছে ৪ হাজার টাকা। অথচ সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারলে প্রতি মণ ধান ৭২৪ টাকা করে পেতেন।

এই বিষয়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, গুদামে স্থানাভাবে ধান-চাল কেনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ৩১ আগস্টের মধ্যে যে পরিমাণ ধান ও চাল কেনার নির্দেশ আছে, সে পরিমাণ কেনা হবে।