Thank you for trying Sticky AMP!!

আক্কেলপুর আ.লীগের সম্মেলন ঘিরে দুই কিলোমিটারে ৪০টি তোরণ

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ঘিরে আক্কেলপুর পৌরশহরের প্রধান সড়কে তোরণের ছড়াছড়ি। আজ মঙ্গলবার সকালে তোলা

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের অস্থায়ী বাস টার্মিনাল থেকে নবাবগঞ্জ সেতুর দূরত্ব মাত্র দুই কিলোমিটার। এই দূরত্বের মধ্যে ৪০টি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া শহরের বাইরে তিনটি পৌর শহরের প্রবেশদ্বারের সংযোগ সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে আরও ৩৫টি তোরণ। ১১ মার্চ অনুষ্ঠেয় আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে এই ৭৫টি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।

সম্মেলনস্থল আক্কেলপুর মুজিবুর রহমান (এমআর) সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠ। সেখানে করা হয়েছে নৌকার আদলে একটি বিশাল মঞ্চ। সেখানে ১২৫টি আসন থাকবে। এসব আসনে কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বর্তমান এবং সাবেক নেতারা বসবেন। পাশাপাশি ২০ হাজার লোকের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্যান্ডেলও করা হচ্ছে। সম্মেলনস্থলের মঞ্চে ডান পাশে সাঁটানো হবে বর্তমান সরকারের আমলে আক্কেলপুর উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের স্থিরচিত্র।

দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন বলে প্রচার করা হচ্ছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের এই ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে পুরো পৌর শহরে এখন সাজসাজ রব বিরাজ করছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। কয়েক দিন ধরে দলীয় পদ-পদবিপ্রত্যাশীরা দৌড়ঝাঁপ করছেন। এবার সম্মেলনে নেতৃত্বে চমক আসতে পারে বলে দলটির নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ঘিরে আক্কেলপুর মুজিবুর রহমান (এমআর) ডিগ্রি সরকারি কলেজ মাঠে নৌকার আদলে মঞ্চ বানানোর কাজ চলছে। আজ মঙ্গলবার সকালে

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সম্মেলনে মোকছেদ আলী মাস্টার সভাপতি ও গোলাম মাহফুজ চৌধুরী ওরফে অবসর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বিভিন্ন কারণে যথাসময়ে আর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। নির্ধারিত সময়ের পাঁচ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর আগামী বৃহস্পতিবার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে মোকছেদ আলী মাস্টার আবার সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন। তবে বর্তমান পৌর মেয়র গোলাম মাহফুজ চৌধুরী আর সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হচ্ছেন না। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনেও তিনি মেয়র পদে প্রার্থী হননি। দুটি পদ থেকেই তিনি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এ কারণে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসছে এটা অনেকটাই নিশ্চিত।

আমি পৌরসভা মেয়র পদে মনোনয়ন চাইনি। আবার দলের সাধারণ সম্পাদকের পদেও থাকতে চাই না। এ কারণে এই সম্মেলনটি দলের নেতা-কর্মীদের কাছে স্মরণীয় করে রাখতে চাই। সম্মেলনের সব টাকাপয়সা দলীয় নেতা-কর্মীরা স্বেচ্ছায় দিয়েছেন। আমরা কারও কাছে জোর করে একটিও টাকা নিইনি।
গোলাম মাহফুজ চৌধুরী, আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র

দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী প্রচারণা শুরু করেছেন। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র গোলাম মাহফুজ চৌধুরী সরে দাঁড়ালেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে তাঁর মনোনীত প্যানেল থাকছে। সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি মোকছেদ আলী মাস্টার ও আক্কেলপুর মুজিবুর রহমান (এমআর) সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোকছেদ আলীর নাম শোনা যাচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক পদে নাম শোনা যাচ্ছে রুকিন্দীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আহসান কবির ও বর্তমান পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসনাতুজ্জামান শাহীনের। মোকছেদ আলী মাস্টার ও হাসনাতুজ্জামান শাহীন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র গোলাম মাহফুজ চৌধুরীর সমর্থিত প্যানেল বলে পরিচিত।

সম্মেলনের আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে ১৭ হাজার লোকের দুপুরের খাবার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া পুরো শহরজুড়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পৌরসভার নবনির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, দলীয় নেতাদের সৌজন্যে এসব তোরণ নির্মিত হয়েছে।

আক্কেলপুর পৌর শহরের অস্থায়ী বাস টার্মিনাল থেকে নবাবগঞ্জ সেতু পর্যন্ত মাত্র দুই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে ৪০টি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া শহরের বাইরে তিনটি পৌর শহরের প্রবেশদ্বারের সংযোগ সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে আরও ৩৫টি তোরণ। ১১ মার্চ অনুষ্ঠেয় আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে এই ৭৫টি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে

শহর ঘুরে দেখা গেছে, অস্থায়ী বাস টার্মিনাল থেকে নবাবগঞ্জ সেতু পর্যন্ত ৪০টি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। অস্থায়ী বাস টার্মিনাল এলাকার চারমাথায় নির্মিত তোরণে সৌজন্যে লেখা রয়েছে গণিপুর দাখিল মাদ্রাসার নাম। একইভাবে শহরজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কাউন্সিলর, আহসান কবিরের সৌজন্যে লেখা দেখা গেছে। দলীয় সম্মেলনকে ঘিরে এত তোরণ নির্মাণে লোকজনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। রিকশাচালক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘সম্মেলনে যত টাকা খরচা হচ্ছে, এই টাকায় অনেক অসহায় মানুষকে পুনর্বাসন করা যেত। তারপরও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন বলে কথা।’

আওয়ামী লীগ নেতা ওমপ্রকাশ আগরওয়ালা প্রথম আলোকে বলেন, এত জাঁকজমকপূর্ণ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন আগে কখনো হয়নি। ২০২১ সালের ১১ মার্চের সম্মেলন দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। উপজেলা আওয়ামী লীগ এই সম্মেলনের আয়োজন করছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র গোলাম মাহফুজ চৌধুরী আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি পৌরসভা মেয়র পদে মনোনয়ন চাইনি। আবার দলের সাধারণ সম্পাদকের পদেও থাকতে চাই না। এ কারণে এই সম্মেলনটি দলের নেতা-কর্মীদের কাছে স্মরণীয় করে রাখতে চাই। সম্মেলনকে ঘিরে পৌর শহর ও বাইরে ৭৫টি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ব্যক্তি উদ্যোগে এসব তোরণ নির্মাণ করেছে। সম্মেলনের সব টাকাপয়সা দলীয় নেতা-কর্মীরা স্বেচ্ছায় দিয়েছেন। আমরা কারও কাছে জোর করে একটিও টাকা নিইনি।’