Thank you for trying Sticky AMP!!

মাদারীপুরে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৯০০ ছাড়াল

করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি

মাদারীপুর জেলায় নতুন করে ৩০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় কোভিড–১৯–এ সংক্রমিত রোগী ৯০০ ছাড়াল। আজ বৃহস্পতিবার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ১৫০ জনের আসা প্রতিবেদনের মধ্যে ৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৫ জনই সদর উপজেলার বাসিন্দা। এই নিয়ে সদর উপজেলায় সংক্রমিত হলেন ৩৩৮ জন। রাজৈর উপজেলায় নতুন করে থানার এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ নয়জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজৈর উপজেলায় ২৭৮ জন সংক্রমিত হলেন। কালকিনি উপজেলায় নতুন করে ৩ জনসহ মোট শনাক্ত ১৬৮ জন। আর শিবচর উপজেলায় তিন সেনা সদস্যসহ মোট শনাক্ত ১৪২ জন। সব মিলিয়ে জেলায় কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯২৬। তাঁদের মধ্যে মারা গেছেন ১৪ জন।

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংক্রমণ বাড়ছে আবার সুস্থও হচ্ছে। তবে করোনার সংক্রমণের হার বিবেচনায় জোন ভাগ করে লকডাউন করা আমাদের একার বিষয় নয়। সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয় দরকার। তারপরও আমরা সংক্রমণের হার যেখানে বেশি, সেখানে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করে যাচ্ছি। সামনে কোরবানির ঈদ ঘিরে মানুষকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নেব। কারণ, ঈদের আগে মানুষের আরও চাপ বাড়বে, এতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’

জোনভিত্তিক লকডাউন কার্যকর না থাকায় জেলায় করোনার সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। বৃহস্পতিবার জেলায় নতুন করে ৩০ জন শনাক্ত হয়েছেন। এদিকে জেলায় করোনা প্রতিরোধের জন্য একাধিক কমিটি গঠন করা হলেও সংক্রমণ রোধে তাঁদের সব ধরনের কার্যক্রম থমকে রয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সংক্রমণ ঠেকাতে নেই তেমন কোনো তৎপরতা। ফলে জেলায় করোনায় সংক্রমণের হার দিন দিন বেড়েই চলেছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৮ মার্চ মাদারীপুর জেলায় প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। এরপর দুই মাসে করোনা শনাক্ত হয় ৫০ জন। মে মাসে আরও ৭৩ জন শনাক্ত হয়। জুন মাসে শনাক্ত হলেন ৬৬৯ জন। জুলাই মাসের ৯ দিনে শনাক্ত হলেন ১৩৪ জন। বর্তমানে জেলায় মোট শনাক্ত ৯২৬ জন। এ ছাড়া করোনায় মৃত্যুর হার বিবেচনায় মার্চে ১৮ তারিখ মাদারীপুরে করোনায় প্রথম মৃত্যু ঘটে। এরপর দুমাসে করোনায় আরও দুজনের মৃত্যু বেড়ে ৩ জন হয়। জুন মাসে করোনায় মারা গেলেন ৯ জন। জুলাই মাসের শুরুতে আরও দুজন করোনায় মৃত্যু হয়। করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিরা বেশির ভাগই বাড়িতে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।

পুলিশ ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র জানায়, ৫ ও ৬ জুলাই জেলার যেসব ব্যক্তি করোনা পরীক্ষার নমুনা দিয়েছিলেন, তাঁদের প্রতিবেদন আসে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে।

এদিকে জেলার হাটবাজারগুলোতে মানুষের সমাগম ও চলাফেরা আগের মতোই বিদ্যমান রয়েছে। জেলায় সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও সচল রয়েছে। বেশির ভাগ মানুষ এখনো মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। যানবাহনগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো তৎপরতাও নেই। বাইরে আসা বেশির ভাগ মানুষ এখনো মাস্ক ব্যবহার করছে না। ফলে জেলায় করোনার সংক্রমণ কমে আসার বিপরীতে বাড়ছে।

জানতে চাইলে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন বলেন, ‘আমি জেলায় একদম নতুন যোগদান করেছি। জেলায় সংক্রমণ রোধে আমি সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলেছি। করোনা প্রতিরোধের জন্য এখানে আগে যেসব সিদ্ধান্ত মেনে কাজ চলমান ছিল, তা থাকবে। নতুন করে আমি আরও কিছু সিদ্ধান্ত হাতে নিয়েছি। এর মধ্যে সবার বাধ্যতামূলক মাস্ক পরার বিষয়টি নিশ্চিত করা। প্রচারণায় মাইকিং করা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা।’