Thank you for trying Sticky AMP!!

মাল্টা চাষে স্বপ্ন বুনছেন পঞ্চগড়ের চাষিরা

শখ থেকেই তরিকুল আলম এখন সফল মাল্টাচাষি

শখের বশে ২০১৮ সালের শুরুর দিকে কৃষি বিভাগের ‘লেবু–জাতীয় ফলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প’ থেকে ৪০টি মাল্টাগাছের চারা নিয়ে বাড়ির পাশে ছোট একটি বাগান করেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তরিকুল আলম। ধীরে ধীরে তাঁর সেই বাগান বড় হতে থাকে। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে তিনি এক একর জমির ওপর মাল্টাবাগান করেন।

পরের বছরই ওই বাগান থেকে ১২ মণ মাল্টা বিক্রি করেন তরিকুল। আর চলতি মৌসুমে বাগানের প্রতিটি মাল্টাগাছ ফলে ফলে ভরে উঠেছে। এবার এক একরের এই বাগান থেকেই চার লাখ টাকার বেশি মাল্টা বিক্রির আশা করছেন তরিকুল।

ফলে ফলে ভরে উঠেছে একটি মাল্টা বাগান

দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকেরা এখন তরিকুলের মতো মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বাড়ির আঙিনায় শখের বশে অনেকেই মাল্টাগাছ রোপণ করলেও এখন মাল্টা চাষ পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষে উপযোগী হওয়ায় ভালো ফলনের পাশাপাশি উৎপাদিত মাল্টা খেতেও সুস্বাদু হচ্ছে। এতে দামও ভালো পাচ্ছেন চাষিরা। সেই সঙ্গে দিন দিন বাড়ছে মাল্টাচাষির সংখ্যা।

জেলায় এ পর্যন্ত মোট ২১ হেক্টর জমিতে মাল্টাবাগান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ চাষিই বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ করছেন। মাল্টাচাষি তরিকুল আলম বলেন, মাল্টার চারা রোপণের পর ফল আসতে বেশি দিন সময় লাগে না। এক বছরের মধ্যেই ফল চলে আসে। আবার ফল বিক্রিতেও ঝামেলা নেই। ব্যবসায়ীরা সরাসরি বাগান থেকেই ফল কিনে নিয়ে যান। লাভজনক হওয়ায় ভবিষ্যতে বাগান আরও বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

গাছ লাগানোর পর বছর ঘুরতেই ফলের দেখা মেলে

এদিকে অনেকেই মাল্টাবাগানে পেঁপে, কমলাসহ বিভিন্ন ফলের চারা রোপণ করে মিশ্র বাগান তৈরিরও চেষ্টা করছেন। এতে মাল্টা চাষের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে চাষিদের জন্য। জেলার বোদা উপজেলার তেপুকুরিয়া এলাকায় ৬০ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে মাল্টাবাগান করেছেন সৈয়দ মাহফুজুর রহমান। ৬০ বিঘা জমিতে তিনি ৭ হাজার ৪০০টি বারি-১ জাতের মাল্টাগাছের চারা রোপণ করেছেন। মাল্টাগাছের মাঝে মাঝে কিছু পেঁপেগাছও লাগিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘পঞ্চগড়ের মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ এই ফলের চাহিদাও ব্যাপক। তাই জেলার অনেক কৃষক মাল্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। আমরাও কৃষি বিভাগ থেকে চারা, সার, কীটনাশকসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করে চাষিদের পাশে রয়েছি। আশা করছি, একসময় এই জেলায় মাল্টা চাষে বিপ্লব ঘটবে।’