Thank you for trying Sticky AMP!!

মির্জাপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় কুমুদিনী হাসপাতালেও পানি ঢুকেছে। হাসপাতালের প্রধান ফটকে। ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। মির্জাপুর পৌরসভা ও উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে চার শতাধিক বাড়িতে পানি ঢুকেছে। প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। উপজেলার ৫৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ২২টি ক্লিনিক, ২টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া ঐতিহ্যবাহী ভারতেশ্বরী হোমসসহ কমপক্ষে ৯০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় মালপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

আজ শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, মির্জাপুরে গ্রামীণ সড়কগুলোর অধিকাংশ ডুবে যাওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে অধিকাংশ এলাকার মানুষের সড়কপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে মানুষ নৌকা ব্যবহার করছে। মির্জাপুর-উয়ার্শী-বালিয়া সড়কে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মির্জাপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) উপবিভাগ। সড়কটির রোয়াইল এলাকায় রাস্তার ওপর বন্যার পানির তোড়ে প্রায় দেড় ফুট গর্ত হয়ে গেছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের (পুরাতন সড়ক) পোস্টকামুরী (চরপাড়া অংশ) এলাকায় রাস্তার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কুর্ণী, কদিমধল্যা, আছিমতলা, জামুর্কী এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে গন্তব্যে যেতে আগে যেখানে গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করতেন এলাকাবাসী, সেখানে মানুষ নৌকাযোগে যাচ্ছেন। উপজেলার শুভুল্যা ছয়দানা গ্রামের নিজাম মিয়ার ছেলে শামীম মিয়া জানান, এক সপ্তাহ আগে তাঁদের বাড়ির উঠানে পানি আসে। আস্তে আস্তে তা বাড়তে থাকে। তাঁদের বাড়ির উঠানে বর্তমানে প্রায় কোমর পানি। এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যাতায়াতের জন্য উঠানে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। তাঁদের মতো আশপাশের অনেক বাড়ি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভারতেশ্বরী হোমসের ভেতরেও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। ফটকে বেঞ্চ ফেলে শিক্ষকসহ অন্যদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছবি : প্রথম আলো।

বরটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুয়েল হোসেন জানান, দোতলা ভবনের শ্রেণিকক্ষ ও অফিসে পানি ঢোকায় নিচতলা থেকে মালামাল দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তর করেছেন। এতে তাঁদের অফিশিয়াল কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, মির্জাপুরের ১৩টি ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মধ্যে বহুরিয়া, আনাইতারা, ভাতগ্রাম, ফতেপুর ও বানাইল কেন্দ্রে পানি ঢুকেছে। তরফপুর কেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তায় পানি উঠেছে। এতে স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। বহুরিয়া কেন্দ্রের কার্যক্রম পার্শ্ববর্তী এক ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে চালানো হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাকসুদা খানম জানান, যেসব কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে পানি ঢুকেছে, সেখানকার স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পার্শ্ববর্তী বাড়ি থেকে স্থানীয় লোকদের সহায়তায় অব্যাহত রয়েছে।

টিউবওয়েলের গোড়ায় বন্যার পানি ক্রমে উঁচু হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে কুমুদিনী হাসপাতালে। ছবি : প্রথম আলো

মির্জাপুর সওজ উপবিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী এনামুল কবির জানান, মির্জাপুর-উয়ার্শী-বালিয়া সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোয়াইল এলাকার ভাঙা অংশ দ্রুত মেরামত করা হবে।