Thank you for trying Sticky AMP!!

সখীপুরে মৃত নারীর ব্যাংক হিসাবে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা

হিসাব নম্বর লিখতে ভুল হওয়ায় ওই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার ২১৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বাগেরহাটে চলে গেছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বিলাশ চন্দ্র বর্মণ ২০১০ সালের ১৭ জুন মারা যান। ২০১৪ সাল থেকে তাঁর একমাত্র ছেলে পলাশ চন্দ্র বর্মণ ওই ভাতা পেয়ে আসছেন। সরকার সম্মানী ভাতা ইএফটির মাধ্যমে সরাসরি ব্যাংক হিসাবে দিচ্ছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে পলাশ চন্দ্র বর্মণের হিসাবে জানুয়ারি মাসের টাকা পাঠানো হলেও ওই টাকা চলে গেছে এক মৃত নারীর ব্যাংক হিসাবে।

বিলাশ চন্দ্র বর্মণের এই সমস্যার পাশাপাশি আরও ২১৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাতা সোনালী ব্যাংকের সখীপুর শাখায় আসার পরিবর্তে বাগেরহাটে চলে গেছে। ইএফটির (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) মাধ্যমে ভাতা স্থানান্তর নিয়ে এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থা হয়েছে টাঙ্গাইলের সখীপুরে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ বলেন, ‘এমআইএস (ম্যানেজম্যান্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) করার সময় তথ্য পূরণে আমাদের কোনো ভুল হয়নি। তবে শাখার অপশনে অটোমেটিক সখীপুরের স্থলে বাগেরহাট হয়েছে। এদিকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বেলায় হিসাব নম্বর লিখতে ভুল হওয়ায় ওই ভাতার টাকা এক নারীর অ্যাকাউন্টে চলে গেছে। এগুলো সংশোধনের জন্য পাঠানো হয়েছে। আশা করি, শিগগিরই এসব সমস্যার সমাধান হবে।’

উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলায় ৯৯৮ জন তালিকাভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা থাকলেও এমআইএসের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ৯৮৩ জন। এর মধ্যে জীবিত ৬২০ জন। ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা জি টু পি (গভর্মেন্ট টু পারসন) প্রক্রিয়ায় সরাসরি তাঁদের ব্যাংক হিসাবে পাঠানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার মুক্তিযোদ্ধা বা তাঁদের উপকারভোগীকে জানুয়ারি মাসের ভাতা বাবদ ১৮২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরাসরি ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়।

সখীপুর সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার সাইফুল ইসলাম গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ৭৮৬ জনের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকলেও শাখার নাম ভুল হওয়ায় ২১৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার ব্যাংক হিসাবে এখনো টাকা ঢোকেনি। এ ছাড়া আরও একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের হিসাবে টাকা না ঢুকে একজন নারীর হিসাবে টাকা ঢোকার ঘটনাও ঘটেছে। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য এমআইএস করার সময় ভুলবশত ব্যাংকের শাখার লেখার অপশনে সখীপুর লেখা হলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা বাগেরহাট হয়ে গেছে। ফলে তাঁদের হিসাবে টাকা আসেনি।

সখীপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘সালাতন নেছা আমার ওয়ার্ডের মৃত টুক্কু ফকিরের স্ত্রী। তিনি ২০১৭ সালে মারা গেছেন।’

সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সালাতন নেছার ওই অ্যাকাউন্টে ১৬ ফেব্রুয়ারি এক বীর মুক্তিযোদ্ধার ১২ হাজার টাকা ঢোকে। এই টাকা আসা ছাড়া ওই হিসাবে ২০১৬ সালের পর কোনো লেনদেন হয়নি। সালাতন নেছা মারা যাওয়ার বিষয়টিও আমাদের জানা ছিল না। সমাজসেবা কর্মকর্তার চিঠি পেয়ে সালাতন নেছার অ্যাকাউন্টটি আমরা বন্ধ করে দিয়েছি।’