Thank you for trying Sticky AMP!!

মেয়র পদে বিএনপির ‘আকস্মিক’ প্রার্থী বাছাই, একাংশের আপত্তি

বগুড়া পৌরসভার আগামী নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের জন্য প্রার্থী বাছাই শেষে তালিকা চূড়ান্ত করেছে জেলা বিএনপি। সোমবার শহরের নওয়াববাড়ি দলীয় কার্যালয়ে পৌর ও ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভা শেষে বিএনপি প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। পরে রাত আটটার দিকে প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করা হয়।
তালিকায় তৃণমূলের সমর্থনে জেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রেজাউল করিম এগিয়ে আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। তবে এই প্রার্থিতা বাছাইপ্রক্রিয়ায় অনুপস্থিত ছিলেন বগুড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র এ কে এম মাহবুবুর রহমান। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা।
একাধিক দলীয় নেতা-কর্মী জানান, পৌর ও ওয়ার্ড বিএনপির মতবিনিময় সভা ডাকা হলেও সেখানে পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থিতা বাছাইয়ের বিষয়টি আগে থেকে কাউকে জানানো হয়নি। বর্তমান মেয়র এ কে এম মাহবুবুর রহমানসহ মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদেরও এ বিষয়ে আগে থেকে জানানো হয়নি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বরে বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনের কথা রয়েছে। এই নির্বাচন সামনে রেখে সোমবার দলীয় কার্যালয়ে বগুড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি এবং ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের মতবিনিময় সভা আহ্বান করা হয়। বিকেল পাঁচটায় দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় শহরের ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টি ওয়ার্ডের শীর্ষ পাঁচ নেতা এবং শহর কমিটির নেতাদের ডাকা হয়।
সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা বলেন, মতবিনিময় সভায় গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ তৃণমূলের গোপন ভোটিংয়ে পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী বাছাইয়ের আকস্মিক ঘোষণা দেন। কোনো আলোচ্যসূচি ছাড়া এভাবে মতবিনিময় সভা ডেকে প্রার্থী বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক বিরোধিতা করেন মনোনয়নপ্রত্যাশী ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এম আর ইসলামসহ বেশ কয়েকজন নেতা। শেষ পর্যন্ত আপত্তি উপেক্ষা করে উপস্থিত সদস্যের মধ্যে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়।
সভায় বগুড়া পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টি ওয়ার্ড কমিটির ৫ জন করে মোট ৯০ জন এবং পৌর কমিটির ১৮ জনের মতামত নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে সভায় ১১ জন সদস্য অনুপস্থিত থাকায় ৯৭ জন প্রার্থী বাছাইয়ের ভোট দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ।

গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, গোপন ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফলে সর্বোচ্চ সমর্থন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম। তাঁর ভোটের ব্যবধান অনেক। এ জন্য তালিকায় ১ নম্বর ক্রমিকে তাঁর নাম সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এম আর ইসলাম দ্বিতীয়, বর্তমান মেয়র মাহবুবর রহমান তৃতীয়, জেলা বিএনপির সদস্য খায়রুল বাশার চতুর্থ, সাইফুল ইসলাম পঞ্চম এবং লাভলী রহমানকে তালিকার ষষ্ঠ স্থানে রাখা হয়েছে।
মনোনয়নপ্রত্যাশী এম আর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মেয়র পদে তৃণমূলের সমর্থনে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করতে হলে সভার আলোচ্যসূচি আগে থেকে দিয়ে সবার অংশগ্রহণে স্বতঃফূর্তভাবে বাছাইপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা দরকার ছিল। পৌরসভার এখনো তিনটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠনই শেষ হয়নি। নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা হয়নি। তাহলে আলোচ্যসূচি ছাড়া মতবিনিময় সভা ডেকে সেখানে তড়িঘড়ি করে প্রার্থী বাছাইয়ের তালিকা চূড়ান্ত তালিকা তৈরির দরকার কী? এটা আসলে প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়।
প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান পৌর মেয়র এ কে এম মাহবুবর রহমান কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সমর্থনে মেয়র পদে প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তারেক রহমান আগামী পৌরসভা নির্বাচনে বগুড়াকে মডেল ধরে তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতেই দলীয় মনোনয়ন প্রদান করতে চান। হঠাৎ করে প্রার্থী বাছাইয়ে সভায় আপত্তি প্রসঙ্গে সাংসদ বলেন, আগে থেকে কাউকে না জানানোর কারণে দুয়েকজন আপত্তি তুললেও পরে তাঁরা ভোটে অংশ নিয়েছেন। তৃণমূলের গোপন ভোটে প্রার্থিতা বাছাইয়ে সবাই খুশি।