Thank you for trying Sticky AMP!!

যমুনা সার কারখানা থেকে জমাট সার নিচ্ছেন না পরিবেশকেরা

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনা সার কারখানা থেকে আমদানি করা জমাট বাঁধা সার না নেওয়ার দাবিতে পরিবেশকেরা (ডিলার) সার তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন। গত বুধবার থেকে সব ধরনের সার উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। এতে সার সরবরাহ নিয়ে বিপাকে পড়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কারখানা থেকে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলাসহ মোট ১৯ জেলায় সার সরবরাহ করা হয়। পরিবেশকদের দুই ধরনের ইউরিয়া সার দেওয়া হয়। একটি যমুনার নিজস্ব উৎপাদিত সার, যা নিয়ে পরিবেশকদের কোনো অভিযোগ নেই। তবে আমদানি করা সার নিতে চান না পরিবেশকেরা। পরিবেশকদের অভিযোগ, আমদানি করা সার জমাট বাঁধা, নিম্নমানের, ওজনেও কম থাকে। এই সার কৃষকেরা নিতে চান না। ফলে তাঁদের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।
কারখানা সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের নভেম্বরে অগ্নিকাণ্ডে এই কারখানায় এক বছর সার উৎপাদন বন্ধ ছিল। এ সময় ইউরিয়া সারের চাহিদা মেটাতে চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ সার আমদানি করা হয়। এক বছর পর যমুনা সার কারখানা আবার উৎপাদনে আসে। তবে বিপুল পরিমাণ আমদানি করা সার অবিক্রীত রয়ে যায়। এসব সার খোলা জায়গায় রাখার কারণে বৃষ্টিতে জমাট বেঁধে যায়। বহু বস্তা ফেটে যায়। ওই সার গুঁড়া করে পুনরায় বাজারজাত করা হয়।

১টি ট্রাকের মধ্যে ১২ মেট্রিক টন সার পরিবেশকদের মধ্যে সরবরাহ করা হয়। তার মধ্যে ৯ মেট্রিক টন যমুনার নিজস্ব সারের সঙ্গে ৩ টন আমদানি করা সার নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। গত ২২ আগস্ট নষ্ট সার দেওয়ার অভিযোগে পরিবেশকেরা সার উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর দুই টন করে আমদানি করা সার দেওয়ার নিয়ম করা হয়। তবে পরিবেশকেরা এবার কোনো ধরনের আমদানি করা সার নিতে চান না। ফলে এক সপ্তাহ ধরে সার উত্তোলন করছেন না তাঁরা। এই নিয়ে গত শনিবার কারখানা কর্তৃপক্ষ পরিবেশকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। তবে কোনো সমাধান হয়নি।
কয়েকজন পরিবেশক বলেন, আমদানি করা সার দীর্ঘদিন খোলা আকাশের নিচে পড়ে রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রত্যেক বস্তায় পাথরের মতো শক্ত সার। গুঁড়া করে দিলেও, সেগুলো পাউডারের মতো থাকে। ১ টন সারের দাম ১৪ হাজার টাকা। ২ টন সারে ২৮ হাজার টাকা; পুরো টাকা তাঁদের লোকসান হয়। তাই তাঁরা এবার যমুনার নিজস্ব সার ছাড়া অন্য কোনো সার তুলবেন না।
সদর উপজেলার নান্দিনা এলাকার পরিবেশক আলা উদ্দিন বলেন, ‘আমদানি করা সার নিয়ে বিপাকে রয়েছি। এসব বিক্রির উপযোগী নয়। এই সার আমরা আর উত্তোলন করব না।’
যমুনা সার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) খোকন চন্দ্র দাস বলেন, জমাট বাঁধলেও সারের গুণগত মান খারাপ হয় না। ১০ বছরেও সারের গুণগত মান নষ্ট হয় না। অনেকবার পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। তারপরও পরিবেশকেরা সার উত্তোলন বন্ধ রেখেছেন। এ বিষয়ে পরিবেশকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পরিবেশকেরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সার উত্তোলন শুরু করবে আশা করা যাচ্ছে।