Thank you for trying Sticky AMP!!

যুবলীগ নেতা কারাগারে: অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে যুবলীগ নেতা রাশিদুল ইসলামের পরিবার

কুষ্টিয়ায় আগের বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে রাশিদুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে রাশিদুলের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, তাঁর স্বামীকে ফাঁসাতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) ব্যবহার করা হয়েছে।

গত রোববার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে রাশিদুল ইসলামকে আটক করেন কুষ্টিয়া র‌্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা। রাতে সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাব জানায়, রাশিদুল চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তি ফৌজের প্রধান আমিনুল ইসলাম মুকুলের সহযোগী। মুকুলের হয়ে রাশিদুল এলাকায় আলাদা একটি চরমপন্থী বাহিনী গঠন করেন। এই বাহিনী এলাকায় চাঁদাবাজি, অপহরণ, মারামারিসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছিল।

আজ বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন রাশিদুলের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন। এ সময় এ দম্পতির কলেজপড়ুয়া ছেলে রাকিব হোসেন, অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া মেয়ে রোখসানা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।

রাজিয়া খাতুন বলেন, তাঁর স্বামী কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক এবং পেশায় মুদি ব্যবসায়ী। রোববার তাঁকে অস্ত্রসহ আটক দেখায় র‌্যাব। পরে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর স্বামীকে ফাঁসানোর পেছনে রয়েছেন র‍্যাবের সোর্স পরিচয়দানকারী লিপটন নামের এক ব্যক্তি। লিপটনের আত্মীয় আনিচুর রহমান ওরফে ঝন্টু ও রাশিদুল একই ইউনিয়ন থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দেওয়ার পর তাঁদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এরপর আনিচুর রহমানের পক্ষ হয়ে লিপটন তাঁর স্বামীকে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন।

রিজিয়া খাতুনের ভাষ্যমতে, রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় তাঁর স্বামী ভবানীপুর বাজারে সাদ্দামের চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় একটি ইজিবাইকে করে চারজন লোক রাশিদুলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বাজারের লোকজন বাধা দিলে তাঁরা র‌্যাবের লোক বলে পরিচয় দেন। র‌্যাব সদস্যদের সঙ্গে সে সময় লিপটনও ছিলেন। ইজিবাইকে করে স্থানীয় বালিয়াপাড়া বাজারে নিয়ে আগেই থেকেই র‌্যাবের একটি মাইক্রোবাস অপেক্ষা করছিল। ওই মাইক্রোবাসে করে রাশিদুলকে কুষ্টিয়া র‌্যাব কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

রিজিয়া খাতুন জানান, ওই রাতে র‌্যাব সদস্যরা রাশিদুলকে গাড়িতে করে তাঁদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। এ সময় তাঁর চোখ কালো কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। তাঁকে গাড়ি থেকে নামানোও হয়নি। র‌্যাব সদস্যরা বাড়িতে তল্লাশি চালান। তাঁরা বাড়ির বাইরে খড়ের গাদা তছনছ করে হঠাৎ করে বলেন, সেখানে নাকি বন্দুক পাওয়া গেছে।

রাজিয়া খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আগামী ইউপি নির্বাচনে লিপটনের আত্মীয় আনিসুর রহমান কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চান। প্রতিপক্ষ হওয়ায় রাশিদুলকে শায়েস্তা করতে অস্ত্র–নাটক সাজানো হয়েছে।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে লিপটন বলেন, ‘এমন অভিযোগের বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই। ঘটনার দিন আমি এলাকাতেই ছিলাম না। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কখন, কেন, কাকে ধরবে, সেটা তাদের বিষয়।’

আনিচুর রহমান বলেন, ‘রাশিদুল আমার পাশের গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব বা বিরোধ নেই। তবে তাঁর পরিবার হয়তো তৃতীয় কোনো পক্ষের মদদে আমাকে প্রতিপক্ষ বানাচ্ছে।’

এ সম্পর্কে র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর গাফফারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। এতে কারও কোনো ইন্ধন বা যোগসাজশ নেই। র‌্যাব কারও দ্বারা ব্যবহৃত হয় না। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’