Thank you for trying Sticky AMP!!

যেন সবুজের বুকে বেগুনি বিছানা

বেগুনি ধানগাছ। খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার শান্তিপুরে। ছবি: প্রথম আলো

চারপাশে সবুজ ধানখেত। মাঝখানে একচিলতে জমিতে বেগুনি রঙের ধানের আবাদ। যেন সবুজের বুকে বেগুনি বিছানা। ভিন্ন রঙের এই ধান চাষ স্থানীয় পর্যায়ে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। 

বেগুনি রঙা এই ধানের চাষ হচ্ছে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার শান্তিপুর এলাকায়। স্থানীয় কৃষক মনতোষ চাকমা জেলায় প্রথমবারের মতো এই ধানের চাষ শুরু করেছেন বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা। চলতি বছরের ২১ মে এর চারা রোপণ করেন তিনি।

মনতোষ চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা নামের এনজিওর কাছ থেকে বেগুনি রঙের ধানের বীজ সংগ্রহ করেছেন। ওই এনজিও থেকে ‘সুভাষ’, ‘বাঁশফুল’ ও ‘জুনটি’—এই তিন জাতের চারা নিয়েছেন। এখন পরীক্ষামূলকভাবে ২০ শতক জমিতে চার জাতের ধান রোপণ করেছেন। এসব ধানের ফলন কী রকম হবে, তা দেখার পর ভবিষ্যতে আবাদ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

কৃষি কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, দেশে প্রথম বেগুনি রঙা ধানের আবাদ শুরু হয় গাইবান্ধায়। সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ধান। এই ধানগাছের পাতা ও কাণ্ডের রং বেগুনি। এর চালের রংও বেগুনি। তাই কৃষকদের কাছে এখন পর্যন্ত এ ধানের পরিচিতি বেগুনি রঙের ধান বা রঙিন ধান।

জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মর্ত্তুজা আলী বলেন, বেগুনি রঙের ধানের চাষ খাগড়াছড়িতে এই প্রথম। কেউ এর নাম দিয়েছেন বেগুনি সুন্দরী, কেউ দুলালি সুন্দরী। ফলন ভালো হলে ভবিষ্যতে ধানের আবাদ বৃদ্ধির চিন্তা করা হবে।

পানছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলাউদ্দিন শেখ বলেন, মনতোষ চাকমাকে সব ধরনের পরামর্শসহ কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত ধানখেতটি তদারক করা হচ্ছে।

গত বুধবার দুপুরে পানছড়ির উল্টাছড়ি ইউনিয়নের শান্তিপুরে গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে সবুজ ধানখেতের মাঝখানে বেগুনি রঙের ধানের আবাদ। মনতোষ চাকমার রোপণ করা অন্য তিন জাতের ধানের গাছের রং আলাদা। এক জাত বাঁশফুল রঙের, এক জাত গাঢ় সবুজ রঙের এবং অন্য জাত হালকা সবুজ রঙের।

তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থার প্রকল্প সমন্বয়কারী সকীরণ চাকমা জানান, মিজারিও-জার্মানির অর্থায়নে ঢাকা বারসিক এনজিও থেকে তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা সাত প্রকারের ধানের বীজ সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে চার প্রকারের বীজ তাঁরা মনতোষ চাকমাকে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করতে দিয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিচ্ছিন্নভাবে এই ধানের চাষ শুরু হয়েছে। খাগড়াছড়িতেও চাষ হওয়ার খবর শুনেছেন তাঁরা। এই ধানের পুষ্টিমান বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, এই ধানের পুষ্টিমান, চাষাবাদ পদ্ধতি, ফলনের পরিমাণ, জীবনচক্র, দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর বিষয়, কোন মৌসুমে চাষ করলে ভালো হবে—এসব বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।