Thank you for trying Sticky AMP!!

যেন ভেঙে পড়ার ক্ষণ গুনছে আলাইকুড়ির ‘চিকন ব্রিজ’

১৯৮৬ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এরপর আর সংস্কার করা হয়নি। গত কয়েক বছর এটির নড়বড়ে অবস্থা।

বিকল্প পথ না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়েই যাতায়াত করেন স্থানীয়রা। সম্প্রতি রংপুরের পীরগাছা ইউনিয়নে

স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে সেতুটি পরিচিত ‘চিকন ব্রিজ’ নামে। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার আলাইকুড়ি নদের ওপরের সেতুটির দৈর্ঘ্য ১৩০ ফুট আর প্রস্থ সাড়ে ৩ ফুট। উভয় পাশের নিরাপত্তা বিম ভেঙে গেছে। তলার অংশের সিমেন্ট খসে পড়ায় দেখা যাচ্ছে ইটের টুকরা। সেতুতে ওঠানামা করার রাস্তায় পর্যাপ্ত মাটি না থাকায় ও নিরাপত্তা রেলিং ভেঙে পড়ায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয় পথচারীদের। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

পীরগাছা উপজেলা থেকে পীরগাছা ইউনিয়নের ঠাকুরবাড়ি হাট হয়ে কদমতলী যেতে দেখা মেলে সেতুটির। সেতুর নিচের আলাইকুড়ি নদটিও শুকিয়ে নালা হয়ে গেছে। এরপরও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় আশপাশের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা এই সেতু দিয়ে আলাইকুড়ি নদ পার হয়। চলে সিএনজিচালিত অটোরিকশাও। নদের আশপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে উপজেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিলে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। গত কয়েক বছর এটির নড়বড়ে অবস্থা। স্থানীয় ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন, উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও সংস্কারকাজ করা হয়নি।

তবে পীরগাছা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান বলেছেন, সেতুটির সংস্কারের জন্য তিনি অনেক জায়গায় গিয়েছেন। উপজেলা পরিষদের মাসিক সভাসহ বিভিন্ন সভায় আলোচনা করা হয়। কিন্তু কোথাও থেকে ইতিবাচক সাড়া মিলছে না। আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ শামসুল আরেফীন বলেন, ব্রিজটি কোন দপ্তর থেকে করা হবে—এমন জটিলতার কারণে বরাদ্দ মিলছে না।

সেতুর দুই প্রান্তে গর্ত হয়েছে। রেলিং ভেঙে গেছে। কিছুদিন আগে যাত্রীসহ একটি অটোরিকশা উল্টে নিচে পড়ে যায়।
উজির আলী, বাসিন্দা, পীরগাছা ইউনিয়ন

গত বুধবার দুপুরে সেতু এলাকায় গিয়ে কথা হয় নগরজিৎপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসেন আলী, তালুক ইশাদ দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি শফিকুল ইসলাম ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হোসনে আরার সঙ্গে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হোসনে আরা বলেন, তিনি জন্মের পর থেকে সেতুটির কোনো সংস্কার হতে দেখেননি। প্রশস্ত না হওয়ায় চার চাকার কোনো গাড়ি সেতুর ওপর দিয়ে যেতে পারে না। সেতুর ওপর উঠলেই ধসে পড়ার শঙ্কা কাজ করে।

নগরজিৎপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসেন আলী বলেন, বছরখানেক আগে সেতু পারাপারের সময় তাঁর বিদ্যালয়ের দুজন নিচে পড়ে আহত হয়েছিল। সেতু ভেঙে নতুন করে সেখানে প্রশস্ত একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

এমন আরেকটি ঘটনার কথা জানান স্থানীয় বাসিন্দা উজির আলী। বলেন, সেতুর দুই প্রান্তে গর্ত হয়েছে। পশ্চিম প্রান্তে নিরাপত্তা রেলিং ভেঙে গেছে। কিছুদিন আগে তিন যাত্রীসহ একটি অটোরিকশা উল্টে নিচে পড়ে যায়। পারাপারের সময় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি দ্রুত সেতুটির সংস্কার চান।