Thank you for trying Sticky AMP!!

রাজশাহী মেডিকেলে বদলে গেল ট্রলিসেবা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ টাকা জমা দিয়ে রোগী বহনের জন্য ট্রলি নিচ্ছেন স্বজনেরা। সম্প্রতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। প্রথম আলো

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকতেই কানে মাইকের শব্দ। এক আনসার হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা করছেন, ‘যাঁদের ট্রলি লাগবে, তাঁরা এখানে আসেন।’ ঘোষণা শুনে আনসার সদস্যের দিকে ছুটছেন রোগীর স্বজনেরা। খাতায় রোগীর নাম লিখে আর ১০০ টাকা জমা দিয়ে ট্রলি নিচ্ছেন। কেউ আবার ট্রলি ফেরত দিয়ে জমার টাকা ফেরত নিচ্ছেন।

ট্রলিসেবা নিতে হাসপাতালে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনদের হয়রানি কমাতে গত শনিবার থেকে এই পদ্ধতিতে ট্রলিসেবা চালু করেছে রামেক কর্তৃপক্ষ। এর আগে দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকেরা ট্রলি টানতেন। অভিযোগ আছে, তাঁরা ইচ্ছেমতো রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেল, এই পদ্ধতিতে ট্রলিসেবার জন্য প্রাথমিকভাবে ১৫টি ট্রলি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অন্য ট্রলি থেকে আলাদা করতে লাগানো হয়েছে আকাশি রং। রোববার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে ঢোকার মুখেই এক পাশে ট্রলিগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে। রোগীর স্বজনেরা নিজেরাই ট্রলি বের করে রোগীকে তুলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন। পরে সেখান থেকে নিচ্ছেন ওয়ার্ডে। এরপর আবার ট্রলি রাখার নির্ধারিত স্থানে এসে ট্রলি ফেরত দিয়ে জমা টাকা নিয়ে যাচ্ছেন।

হাসপাতালের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে রোগী রেখে ট্রলি ফেরত দেওয়ার সময় কথা হয় নওগাঁর পোরশা থেকে আসা মো. জুয়েলের (৩০) সঙ্গে। বলছিলেন, স্বজনেরা যখন প্রচণ্ড মন খারাপ অবস্থায় একটি রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন, সেই মুহূর্তেও ভাড়া নিয়ে ট্রলিশ্রমিকেরা দুর্ব্যবহার করতেন। এমনকি কেউ মারা গেলে তাঁকে ট্রলিতে করে নেওয়ার পরও এমন ব্যবহার সহ্য করতে হতো। এই সুবিধা চালু হওয়ায় এখন ভোগান্তি কমবে বলে মনে হচ্ছে।

নাটোরের মাদনগর এলাকা থেকে রোগী নিয়ে এসেছেন অসীম উদ্দিন। তিনিও বললেন, নিজেরা ট্রলি বহনের কারণে রোগীকে দ্রুত সময়েই চিকিৎসকের কাছে নেওয়া যাচ্ছে। আগে ট্রলিশ্রমিকদের জন্য অপেক্ষা করতে হতো।

তবে ট্রলিশ্রমিকেরা বলেছেন, এমন পদ্ধতি চালুর কারণে তাঁদের জীবিকায় টান পড়ল। তাঁদের দাবি, ট্রলি টানার জন্য হাসপাতাল থেকে দিনে ১২০ টাকা পান তাঁরা। এতে সংসার চলে না। তাই রোগীর স্বজনদের থেকে অতিরিক্ত টাকা নেন।

হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস জানালেন, এই পদ্ধতি চালুর প্রথম দিনেই ৮১ জন রোগীর স্বজন ট্রলি ব্যবহার করেছেন। নতুন করে আরও ১০টি ট্রলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকেরাও থাকছেন। স্বজনেরা চাইলে তাঁদের সেবা নিতে পারেন। যাঁরা তা চান না, তাঁদের জন্য নতুন এই সেবা।