Thank you for trying Sticky AMP!!

রাজৈর পৌর নির্বাচনে সংগঠন বিরোধী ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তিন নেতাকে বহিষ্কারের কথা জানায় জেলা আওয়ামী লীগ। আজ শনিবার দুপুরে রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে

রাজৈর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও তিন মেয়র প্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ

মাদারীপুরের রাজৈর পৌর নির্বাচনে দল থেকে মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হওয়ায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তিন নেতা এবং মেয়ে প্রার্থী হওয়ায় রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। আজ শনিবার দুপুরে রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাঁদের বহিষ্কার বিষয়টি জানানো হয়।

বহিষ্কৃতরা হচ্ছেন রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব মিয়া, রাজৈর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. সিদ্দিকুর রহমান, রাজৈর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র মো. শামীম নেওয়াজ এবং রাজৈর পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক গোপা শারমীন।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, আসন্ন রাজৈর পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমা রশীদের পক্ষে দলীয় নেতাদের কাজ করার কথা। অথচ ওই চার নেতা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নিজেরা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, নয়তো বিদ্রোহী প্রার্থীকে সহযোগিতা করে নির্বাচনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, যা সংগঠনবিরোধী ও দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের শামিল। তাই দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তাঁদের বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।

আসন্ন রাজৈর পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমা রশীদের পক্ষে দলীয় নেতাদের কাজ করার কথা। অথচ ওই চার নেতা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নিজেরা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, নয়তো বিদ্রোহী প্রার্থীকে সহযোগিতা করে নির্বাচনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা, মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি

বহিষ্কারের সুপারিশপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের ওই ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা বলছেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের একক সিদ্ধান্ত ও স্বজনপ্রীতির কারণে অযোগ্য একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাঁর ভাই আল-আমিন মোল্লা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচন করেন। তখন তাঁকে বহিষ্কার তো দূরের কথা, তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। এখন তারা নিজ স্বার্থের কারণে অন্যায়ভাবে আমাদের বহিষ্কার করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।’

এর আগে গত ২৯ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে তিন বিদ্রোহী প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) পাঠান। তাঁদের তিন কর্মদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। এ সম্পর্কে কাজল কৃষ্ণ দে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংগঠনবিরোধী ও দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়ে আমরা তাঁদের নোটিশ দিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা কোনো জবাব দেননি। তাই দল থেকে আমরা তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করেছি এবং স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।’

আমি অসুস্থ, বিছানায় শোয়া। বেশ কিছুদিন ধরে কোনো কাজই করতে পারছি না। আমার মেয়ে একটি কলেজের শিক্ষক, আমার বাইরে তার নিজের স্বাধীনতা আছে। সেই স্বাধীনতা থেকে আমার মেয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করছে। এখানে আমার ভুল কোথায়? আমাকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে।
আবদুল মোতালেব মিয়া, রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান

বহিষ্কারের বিষয়ে রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব মিয়া বলেন, ‘আমি অসুস্থ, বিছানায় শোয়া। বেশ কিছুদিন ধরে কোনো কাজই করতে পারছি না। আমার মেয়ে একটি কলেজের শিক্ষক, আমার বাইরে তার নিজের স্বাধীনতা আছে। সেই স্বাধীনতা থেকে আমার মেয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করছে। এখানে আমার ভুল কোথায়? আমাকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, বহিষ্কার হওয়া শামীম নেওয়াজ (বর্তমান মেয়র) ও গোপা শারমীন এই আসনের (মাদারীপুর-২) সাংসদ শাজাহান খানের অনুসারী। অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নাজমা রশীদ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের অনুসারী। আওয়ামী লীগের এই দুই নেতার মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে মেয়র পদের নির্বাচনে তিনজন ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীসহ মোট ৭ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১২টি ভোটকেন্দ্রে আগামী ১০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।