Thank you for trying Sticky AMP!!

লিচুতে মলিন চাষির হাসি

গত বুধবার মান ও আকারভেদে প্রতি ১ হাজার লিচু বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কানুমোল্লার বটতলায় জমে উঠেছে লিচুর বেচাবিক্রি। গত বুধবার দুপুরে

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় আগাম জাতের মোজাফফরপুর লিচু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের পাইকারি মোকাম কানুমোল্লার বটতলা জমে উঠেছে। ফড়িয়া-পাইকারদের হাঁকডাকে মুখর লিচুর মোকামটি। তবে লিচুর দাম কম হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি নেই।

চাষিরা বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় এ বছর লিচু ছোট হয়েছে। স্বাদেরও রকমফের হচ্ছে। তা ছাড়া গরমের কারণে অনেক লিচু পেকে যাওয়ায় দ্রুত গাছ থেকে লিচু সংগ্রহ শুরু করছেন চাষিরা। তাই মোকামে আমদানি বেড়েছে। এর সুযোগ নিচ্ছেন মহাজন-ফড়িয়ারা। এর ফলে অপেক্ষাকৃত কম দামে লিচু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশীদ বলেন, মোজাফফরপুর জাতের লিচুর ফলন বেশি হয়। পোকার আক্রমণ কম হয়। এবার ৪১০ হেক্টরে ২০৫টি বাগানে চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন। এসব লিচুর বাজারমূল্য ৩০ কোটি টাকার বেশি।

গত বুধবার দুপুরে লিচুর মোকামে গিয়ে দেখা যায়, লাল টসটসে লিচু থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে আড়তে। অনেকে আবার ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দরদাম হাঁকছেন। লিচুচাষিরা দূরের বাগান থেকে ব্যাটারিচালিত ভ্যান, বাইসাইকেল কিংবা মোটরসাইকেলের পেছনে ঝুড়িতে করে লিচু নিয়ে আসছেন মোকামে।

মোকামে আসা চাষিরা বলেন, লিচুর মান ও আকারভেদে প্রতি ১ হাজার লিচু বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। অথচ গত ২ বছর করোনার মধ্যেও প্রতি হাজার লিচু বিক্রি হয়েছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়।

চাষিরা আরও বলেন, প্রতি বিঘায় ১২টি করে লিচুর গাছ থাকে। প্রতিটি গাছে গড়ে পাঁচ হাজার লিচু ধরে। প্রতি হাজার লিচুর দাম ১ হাজার ৫০০ টাকা হলেও ৯০ হাজার টাকা বিক্রি করা যায়। কিন্তু সার, কীটনাশক বাগান পরিচর্চা ও শ্রমিক নিয়োগ করে লিচু সংগ্রহ করে আড়তে আনতে প্রতি বিঘায় গড়ে ৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। এর ফলে এ বছর লিচুতে লাভের দেখা মিলছে না।

লিচু আড়তদার সমিতির সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন মোল্লা বলেন, এখানে ১৭টি লিচুর আড়ত রয়েছে। প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। জুনের প্রথম সপ্তাহেই মোকাম বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, অন্য বছরগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ৪০ ট্রাক লিচু এ মোকাম থেকে যেত। প্রতি ট্রাকে যায় ২০০ ঝুড়ি (১ ঝুড়িতে ২ হাজার ২০০টি লিচু থাকে)। এ বছর ১৫–২০ ট্রাকের বেশি যাচ্ছে না। দামও কম।