Thank you for trying Sticky AMP!!

শতবর্ষী আবু সিনা ছাত্রাবাসে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করার দাবি

সিলেট নগরের ঐতিহ্যবাহী আবু সিনা ছাত্রাবাস রক্ষার দাবিতে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি। গতকাল বিকেলে ছাত্রাবাসের সামনে। ছবি: প্রথম আলো

সিলেটে আদি-ঐতিহ্যের কাঠামোয় তৈরি এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শতবর্ষী ভবন ‘আবু সিনা ছাত্রাবাস’ সংরক্ষণ করে বিভাগীয় জাদুঘর স্থাপনের দাবি জানিয়েছে স্থাপত্য, পরিবেশ ও ঐতিহ্য রক্ষার সংগঠনগুলো। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আবু সিনা ছাত্রাবাস প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সেভ দ্য হেরিটেজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’-এর উদ্যোগে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি পালন করে এ দাবি জানানো হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে নাগরিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন করে একই দাবি জানিয়েছিলেন সিলেটের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি মানববন্ধন থেকে ঘোষণার পর গতকাল বিকেল চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত আবু সিনা ছাত্রাবাসের বারান্দায় বসে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শতবর্ষী ভবন রক্ষার দাবিতে সংহতি সমাবেশ হয়। আয়োজক সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী আবদুল হাই আল হাদী সমাবেশ সঞ্চালনা করেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। সংহতি সমাবেশে ‘ছাত্রাবাস সংরক্ষণ ও বিভাগীয় জাদুঘর প্রতিষ্ঠার আন্দোলন’-এর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সূচনা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী।
এরপর পর্যায়ক্রমে বক্তব্য দেন ‘ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দিন জাদুঘর’–এর পরিচালক মোস্তফা শাহ জামান চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান স্থপতি শুভজিৎ চৌধুরী, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন ঢাকার কোষাধ্যক্ষ ইমাম মেহেদী, সিলেট সাইক্লিং কমিউনিটির সভাপতি আরীফ আক্তারুজ্জামান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার যুগ্ম সম্পাদক ছামির মাহমুদ, স্থাপত্য সংঘ শাবিপ্রবির সহসভাপতি সুমন পাল, মনির হোসেন, আবু তাহের প্রমুখ।
অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পরিবর্তন চাই, ঐশিসহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচির ফাঁকে ফাঁকে বক্তারা তাঁদের মতামত, দাবি ও প্রত্নতত্ত্ব রক্ষার আইনি বিষয় তুলে ধরে শতবর্ষী ভবন রক্ষার কথা তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, ১৮৭৬ সালে প্রকাশিত সিলেটের প্রথম সংবাদপত্র শ্রীহট্ট প্রকাশ-এর ছাপাখানা ছিল এই ভবন। শুধু এই তথ্যে ভবনটি শতবর্ষী। পুরাকীর্তি হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব তালিকায় স্থান পাওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশ পুরাকীর্তি আইন ১৯৬৮ অনুযায়ী এটি ভাঙা সম্পূর্ণ বেআইনি একটি কাজ। আইনে বলা আছে, কোনো ভবন বা স্থাপনা মূলত সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক বা ব্যবহারিক মূল্য বিবেচনায় সংরক্ষণ করা বা ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করা হয়। সরকারের প্রকল্পের মধ্যে আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে তা হবে গোটা জাতির জন্য বিস্ময়ের। ২৫০ শয্যার হাসপাতাল পার্শ্ববর্তী উন্মুক্ত স্থানে কিংবা শহরতলির টুকেরবাজার, বাদাঘাট বা অন্য কোথাও স্থাপন করার প্রস্তাব দেন বক্তারা।