Thank you for trying Sticky AMP!!

শাল্লায় হামলার ঘটনায় পোস্টদাতা ঝুমনের মায়ের লিখিত অভিযোগ

সুনামগঞ্জের শাল্লায় সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় আরেকটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। যাঁর ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনার সূত্রপাত, সেই ঝুমন দাশের (২৮) মা নিভা রানী দাশ আজ বৃহস্পতিবার শাল্লা থানায় গিয়ে অভিযোগটি দেন।

শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক প্রথম আলোকে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঝুমন দাশের মা নিভা রানী দাশের একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। সেটি পর্যালোচনা করে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে ঝুমনের মা–ও নিশ্চিত করেছেন।

নিভা রানী দাশের আবেদনে ৭২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা হিসেবে আরও দুই হাজার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন তিনি। এর মধ্যে ইউপি সদস্য ও নাসনি গ্রামের শহিদুল ইসলাম ওরফে স্বাধীনের নাম আছে।

লিখিত অভিযোগে নিভা রানী দাশ উল্লেখ করেছেন, তাঁর ছেলে ঝুমনের ফেসবুক পোস্টের জেরে ১৬ মার্চ সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কয়েক হাজার লোক ধারাইন নদীর পাড়ে ভোলানগর গ্রামে জড়ো হন। তাঁরা ঝুমনের ফাঁসি চান, গ্রেপ্তার চান বলে স্লোগান দেন। একই সঙ্গে ঝুমনের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘোষণা দেন। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ধারাইন বাজার ও ভোলানগর গ্রামের লোকজন সেখানে আসেন। তাঁরা ঝুমন দাশকে পুলিশে সোপর্দ করা হবে বলে লোকজনকে জানান। পরে ঝুমনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরদিন তাঁদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট করার হুমকি দেওয়া হয়। পরদিন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ হামলায় শহিদুল ইসলাম নেতৃত্ব দেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।

নিভা রানী দাশের অভিযোগ, হামলাকারীরা ঝুমনের স্ত্রীকে লাঞ্ছিত ও মারধর করেন। এ সময় স্বর্ণালংকার ও ঘরে থাকা ৫৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান হামলাকারীরা। আসামিরা গ্রামের ৮৫টি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের পাশাপাশি মন্দিরও ভাঙচুর করেন।

শাল্লায় সংখ্যালঘুদের গ্রামে হামলার ঘটনায় এর আগে থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। ১৮ মার্চ দুটি ও ২২ মার্চ একটি মামলা হয়। ১৮ মার্চ করা দুটি মামলার একটির বাদী শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল করিম। অন্য মামলাটি করেন নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার। আর ২২ মার্চ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছেন শাল্লা থানার এসআই আবদুল করিম। ঝুমন দাশ এখন কারাগারে আছেন। গ্রামে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।