Thank you for trying Sticky AMP!!

শিক্ষকদের বড় অংশই এখন অনাচারকে মেনে নিচ্ছে

লোভ, ভয়সহ নানা কারণে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বড় অংশই এখন আদর্শের পরিবর্তে দলদাসে পরিণত হয়েছে। আগে যেখানে শিক্ষকেরা যেকোনো গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে ভূমিকা রাখতেন, সেখানে এখন বড় অংশই অনাচারকে মেনে নিচ্ছে। নানা কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন মৃত্যুশয্যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্পর্কে এসব গুরুতর অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাই। তবে তাঁরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে অল্প শিক্ষক হলেও সত্যটা বলে যেতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা নিয়ে আয়োজিত ‘সমকালীন পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষকতা ও চিন্তা-অধিকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বক্তব্য দেন।

আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ‘স্বাধীন চিন্তা শিক্ষক নেটওয়ার্ক’ নামে শিক্ষকদের একটি সংগঠন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিন্নমতের শিক্ষকদের নিয়ে সংগঠনটি গঠিত হয়েছে।

মতবিনিময় সভার শুরুতে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের শিক্ষক সাঈদ ফেরদৌস। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে। অতীতে নানা সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যেকোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অথচ ‘কোটা সংস্কার’ এবং ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা বেধড়ক হামলা ও মামলার শিকার হলেও তেমন জোরদার আওয়াজ শিক্ষকদের দিক থেকে ওঠেনি। মনে হয়, শিক্ষকদের একটি বড় অংশ এসব অনাচারকে মেনে নিয়েছে বা প্রকারান্তরে সমর্থন করছে।

আরেকটি ধারণাপত্র লেখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের শিক্ষক বখতিয়ার আহমেদ। তাঁর পক্ষে ধারণাপত্রটি পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক। এতে বলা হয়, ক্ষমতাসীনদের সন্দেহপ্রবণ মন স্বভাবতই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েই বেশি শঙ্কিত। জীবনধারণ ও ভবিষ্যৎ জীবিকার জটিল সমীকরণ মেলাতে না পেরে হতাশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার প্রসঙ্গ টেনে ধারণাপত্রে বলা হয়, এই শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার মানে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই এখন মৃত্যুশয্যায়।

মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বহু রকমের বিপদের মধ্যে আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে অন্য শিক্ষকদের নানা অনিয়ম-অনাচারের বক্তৃতার প্রসঙ্গে টেনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক শিশির ভট্টাচার্য্য বলেন, যা কিছু বলছেন, তা নতুন কিছু নয়। এগুলো মধ্যযুগেও হতো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীনের সভাপতিত্বে ও সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক সামিনা লুৎফার সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খান, মোহম্মদ আজম, কামরুল হাসান রুশাদ ফরিদী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আল মামুন, কাজী মামুন হায়দার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আর রাজী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসির উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মানস চৌধুরী, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অভিনু কিবরিয়া ইসলাম প্রমুখ।