Thank you for trying Sticky AMP!!

শিক্ষকের অভাবে সাদরি ভাষায় পাঠদান ব্যাহত

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলায় ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ওঁরাওদের নিজস্ব ভাষার নাম সাদরি। এ ভাষা মুখে মুখে চর্চা করা হয়। কিন্তু এ ভাষায় লেখার চর্চা নেই বললেই চলে। ভাষাটি বাঁচিয়ে রাখার জন্য ওঁরাও জনগোষ্ঠীর মানুষের দাবি দীর্ঘদিনের।

এই দাবির মুখে বিলুপ্তির হাত থেকে সাদরি ভাষা রক্ষায় বেসরকারি নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। শেষমেশ ২০১২ সালে সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সাদরি ভাষার পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। প্রাক্‌–প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হয়। কিন্তু প্রশিক্ষিত শিক্ষক নেই। এ কারণে এই ভাষায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। সরকারের কার্যক্রমে গতি আসছে না।

গতকাল রোববার বিষয়টি নিয়ে তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে। তাড়াশ উপজেলার ১৩টি ও রায়গঞ্জ উপজেলায় ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাদরি ভাষার প্রায় ৯০০ শিশু পড়ালেখা করে। প্রাক্‌–প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে চার শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। বছরের প্রথম দিনে তারা অন্যদের মতো নিজেদের ভাষায় প্রকাশিত বই হাতে পায় ঠিকই, কিন্তু এই ভাষায় শিক্ষাদানের মতো শিক্ষক হাতে গোনা। তাই শিশুরা সাদরি ভাষার পাঠ নিতে পারছে না।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ওঁরাও ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক যোগেন্দ্রনাথ সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, সাদরি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কমিটির সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে তাঁরা বই প্রস্তুত করেছেন। সেটি বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকায় বইগুলো যথানিয়মে পড়ানো যাচ্ছে না।

রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের খৈচালা আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রফুল্ল কুমার সরকার বলেন, ‘মুখে মুখে সাদরি ভাষায় কথা বলা হয়। তবে এ ভাষায় লেখার চর্চা নেই বললেই চলে। সরকার উদ্যোগ নিয়েও শিক্ষক না দেওয়ায় আমাদের শিশুরা ভাষাটি শিখতে পারছে না।’

প্রায় একই ধরনের কথা বলেন তাড়াশ উপজেলার ক্ষিরপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেন্দ্রনাথ সরকার ও মাধাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোকুল চন্দ্র মাহাতো।

তাড়াশ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকায় সাদরি ভাষায় শিশুদের ঠিকভাবে পাঠদান করা যাচ্ছে না। তারপরও এ ভাষা জানা শিক্ষকদের দিয়ে পাঠদানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ভাষার শিক্ষক নিয়োগ করা হলে সমস্যাটি আর থাকবে না।