Thank you for trying Sticky AMP!!

‘শিলায় পাতা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেইছে, এই ক্ষতি মুই কেমনে পোষাব!’

শিলার আঘাতে আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়েছে। রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ এলাকায়

ঠাকুরগাঁওয়ে ঝড়ো হাওয়া আর শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে শিলাবৃষ্টিতে আঘাতে বালিয়াডাঙ্গী ও রানীশংকৈল উপজেলার ছয় ইউনিয়নে ভুট্টা, সবজি, মরিচ ও বোরোর চারা মাটিতে শুয়ে পড়েছে। এ ছাড়া শিলার আঘাতে আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়েছে।

গতকাল রোববার বেলা তিনটার দিকে ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়ে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে। এরপর আর কোনো বৃষ্টি না হলেও আজ সোমবার সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন আছে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর গ্রামের রশিদুল হক বলেন, ‘শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ে আমার খেতের ভুট্টাগাছ মাটিতে পড়ে গেছে। এগুলো থেকে ফলন পাওয়ার কোনো ভরসা দেখি না। এবার আমার পুঁজিটাই শেষ হয়ে গেল।’

রানীশংকৈল উপজেলার রাতোর এলাকার কৃষক জয়ন্ত রায় বলেন, ‘আমার দুই একর জমিত বেগুন, মরিচ, করলা ছিল। পাথরে (শিলা) গাছগুলার পাতা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেইছে। যে ক্ষতি হইল, তা মুই কেমনে পোষাব!’

রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, তাঁর ইউনিয়নের নেকমরদ বাজার, গণ্ডগ্রাম, যদুয়ার, ভবানীপুর, চন্দনচহট, দুর্লভপুর, পারকুণ্ডা, ফরিদপাড়া রাতোরসহ বিভিন্ন এলাকায় সবজি, ভুট্টা, মরিচখেত, আম, লিচুবাগানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলার আঘাতে অনেকের ঘরের টিন ফুটো হয়ে গেছে।

শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ে বেশিরভাগ খেতের ভুট্টাগাছ মাটিতে পড়ে গেছে

রানীশংকৈল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, শিলাবৃষ্টিতে ৫৫০ হেক্টর বোরো ধান, ৭৫০ হেক্টর ভুট্টা, ৫০ হেক্টর সবজি, ২০ হেক্টর মরিচখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ২৭ হেক্টর আম ও ৫ হেক্টর লিচুবাগনের গুটি ঝরে গেছে।

আজ সোমবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যান ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবু হোসেন। তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে বালিয়াডাঙ্গী ও রানীশংকৈল উপজেলায় সবচেয়ে বেশি শিলাবৃষ্টি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শিলাবৃষ্টিতে রবি শস্য, মরিচ, ভুট্টার বেশি ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত তথ্য জানানোর জন্য উপজেলার কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেই তথ্য পেতে অপেক্ষা করতে হবে।

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, শিলাবৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাচাই–বাছাই চলছে। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।