Thank you for trying Sticky AMP!!

‘তিনজনের শোক কেমনে ভুলমু?’

নারায়ণগঞ্জে লঞ্চডুবির ঘটনায় শীতলক্ষ্যার তীরে স্বজন হারানো মানুষের আহাজারি

‘একজনের শোক ভোলা যায় না, তিনজনের শোক কেমনে ভুলমু?’—মাটিতে গড়াগড়ি করে বুক চাপড়ে এমনভাবে বিলাপ করে যাচ্ছিলেন গৃহকর্মী ইয়াসমিন বেগম (৪৮)। সাত মাসের শিশুকন্যা মানসুরা ও স্বামী আনোয়ার শেখের সঙ্গে লঞ্চডুবির পর থেকে নিখোঁজ ইয়াসমিনের বোনের মেয়ে মাকসুদা বেগম (২৮)। তাদের খোঁজেই নারায়ণগঞ্জের সৈয়দপুর পাথরঘাট এলাকায় এসেছেন ইয়াসমিন।

ইয়াসমিনের সঙ্গে আছেন নিখোঁজ মাকসুদার দুই সন্তান মাহিন (১২), মাহিয়াসহ (৮) স্বজনেরা। পেশায় মৌসুমি ব্যবসায়ী স্বামীর সঙ্গে সন্তানদের নিয়ে ঢাকার শনির আখড়ায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন মাকসুদা। গতকাল রোববার মুন্সিগঞ্জের আলদীপুরা বাজার এলাকায় বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি।

শীতলক্ষ্যার তীরে বসে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন মাকসুদার স্বজনেরা। প্রতীক্ষায় আছেন জীবিত না হলেও অন্তত প্রিয়জনের লাশটুকু যেন পান। আজ সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ইয়াসমিনদের সে আশা পূর্ণ হয়নি। সকাল পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া পাঁচজনের লাশের মধ্যে তাঁদের স্বজনেরা নেই।

ইয়াসমিনের মতো বহু মানুষ নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ভিড় করেছেন। ঘটনার এত ঘণ্টা পর স্বজনদের জীবিত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন তাঁরা। তবে অন্তত প্রিয়জনের লাশটুকু পাবেন, সে আশায় আছেন। দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বজনদের অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হচ্ছে। নদীর দুই তীরে এখন শুধু স্বজনের আহাজারি।

গতকাল রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায় এম এল সাবিত আল হাসান নামের যাত্রীবাহী দোতলা লঞ্চ। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে সদর উপজেলার সৈয়দপুর পাথরঘাট এলাকায় এসকেএল-৩ নামের একটি কোস্টার জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চটিতে ৭০ জনের বেশি যাত্রী ছিল বলে বেঁচে ফেরা যাত্রীরা জানিয়েছেন। লঞ্চডুবির পরপরই কালবৈশাখী ঝড় শুরু হলে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হয়।