Thank you for trying Sticky AMP!!

সাংসদ একরামুলসহ ৯৬ জনের বিরুদ্ধে কাদের মির্জার জিডি

সেতু মন্ত্রীর ভাই কাদের মির্জা ও নোয়াখালী–৪ আসনের সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী

নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীসহ ৯৬ জনের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কাদের মির্জা বাদী হয়ে থানায় ওই সাধারণ ডায়েরি করেন। কাদের মির্জা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। জিডিতে কাদের মির্জা আসামিদের বিরুদ্ধে তাঁকে বিদেশে ও তাঁর নেতা-কর্মীদের দেশে হত্যা ও লাশ গুমের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন।

কাদের মির্জার জিডিতে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে (বাদল)। এ ছাড়া ওই জিডিতে কাদের মির্জার দুই ভাগনে ফখরুল ইসলাম ওরফে রাহাত ও মাহবুবুর রশিদ ওরফে মঞ্জুর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আ জ ম পাশা চৌধুরী ওরফে রুমেল এবং স্থানীয় দুই সাংবাদিক প্রশান্ত সুভাস চন্দ ও হাসান ইমাম রাশেলকেও আসামি করা হয়েছে।

সাংসদ একমরামুল করিম চৌধুরীসহ ৯৬ জনের বিরুদ্ধে আবদুল কাদের মির্জার থানায় জিডি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, কাদের মির্জার অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জিডিতে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জা উল্লেখ করেন, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তিনি চিকিৎসার জন্য আমেরিকা যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। এরই মধ্যে গোপন সূত্রে জানতে পারেন, ৫ জুন আমেরিকার স্থানীয় সময় রাত ১০টায় আমেরিকায় ৮ নম্বর আসামি আল-আমিনের বাসায় ৭-১৫ নম্বর আসামি এবং বাংলাদেশ সময় ৬ জুন সকাল আটটায় নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুরে সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁর বাসায় মিজানুর রহমান, ফখরুল ইসলাম ও মাহবুবুর রশিদ ওরফে মঞ্জু, খিজির হায়াত খান, আ জ ম পাশা চৌধুরী ওরফে রুমেল গোপন বৈঠক করেন।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়, গোপন বৈঠকে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন আমেরিকায় গেলে তাঁকে সেখানকার কালাইয়্যাদের (কৃষ্ণাঙ্গ) ভাড়া করে হত্যার পর লাশ গুম করা হবে এবং দেশে তাঁর ত্যাগী নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও তাঁদের হত্যা করার নীলনকশা তৈরি করা হয়। এ জন্য দুই কোটি টাকা খরচের বাজেট করা হয়।

কাদের মির্জা জিডিতে অভিযোগ করেন, ৯ জুন তাঁর ভাগনে মাহবুবুর রশিদের বসুরহাট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসায় বৈঠক করে তাঁর অনুসারীদের ওপর হামলা, খুন, গুমসহ বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কাদের মির্জার অভিযোগ, নীলনকশার অংশ হিসেবে পৌরসভার কাউন্সিলরদের প্রভাবিত করে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়ে যেকোনো একজনকে মেয়রের দায়িত্ব দিয়ে পুনঃ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে কোম্পানীগঞ্জের সব অপরাজনীতির গডফাদার রাহাতকে (ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাত) দিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।

কাদের মির্জার জিডির বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী মুঠোফোনে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। তাই এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কাদের মির্জার কোনো অভিযোগই আজ পর্যন্ত সত্য প্রমাণিত হয়নি। উনি সারাক্ষণ মিথ্যা নিয়ে থাকেন। এখন তিনি যেসব অভিযোগ তুলেছেন এগুলো সবই কাল্পনিক।

এ ছাড়া কাদের মির্জার ভাগনে মাহবুবুর রশিদ তাঁদের নামে থানায় কাদের মির্জার জিডির বিষয়ে বলতে গিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘উনি (কাদের মির্জা) উনার বড় ভাই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ভাবি ইশরাতুন্নেসা কাদের, শীর্ষ পর্যায়ের আমলাসহ অনেকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে হত্যার ষড়যন্ত্র, হত্যার জন্য টাকা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত মরেননি। অনেক আমলা এরই মধ্যে অবসরেও চলে গেছেন।’

মাহবুবুর রশিদ বলেন, আসল কথা হলো কাদের মির্জা মানি লন্ডারিং করে আমেরিকা যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে ধরা পড়েছেন। সেখান থেকে ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা তাঁকে ফেরত পাঠিয়েছেন। তা ছাড়া তিনি সিলেটের একটি উন্নয়নকাজের ঠিকাদারি পাইয়ে দেওয়ার জন্য ধান্দা করতে না পেরে এখন উল্টাপাল্টা অভিযোগ করছেন। তাঁর সব অভিযোগই মিথ্যা।