Thank you for trying Sticky AMP!!

সাভারে হাসপাতালের সামনে জব্দ যান

গাইবান্ধার মাঈনুল হোসেন পাঁচ বছর ধরে ঢাকার সাভারে রিকশা চালান। এই দীর্ঘ সময়ে অনেকবারই তাঁকে রোগী নিয়ে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয়েছে। রোগী নিয়ে যাওয়ার পথে হাসপাতাল-সংলগ্ন মাত্র ১০০ গজ সড়কে সব সময়ই তাঁকে যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হয়। বেহাল সড়কটিতে আলামত হিসেবে থানার জব্দ করা যানবাহন রাখায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।

ভোগান্তির কথা শুধু মাঈনুলের একার নয়, অন্য যানবাহনের চালকেরাও একই রকম কথা বলেছেন। মাঈনুল হোসেন বলেন, রোগী নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছে যাওয়ামাত্র যানজটে পড়তে হয়। যানজটের কারণে অনেক সময় রোগীকে সময়মতো চিকিৎসকের কাছে নেওয়া সম্ভব হয় না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার থানাস্ট্যান্ড থেকে নামাবাজার পর্যন্ত সড়কের সাব-রেজিস্ট্রির মোড় থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটকের দূরত্ব মাত্র ১০০ গজ। গত ১০ বছরে এই ১০০ গজ সড়কের কোনো সংস্কার বা উন্নয়ন করা হয়নি। দীর্ঘদিন সংস্কার বা উন্নয়ন না করায় তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সড়কটি সংস্কার না করায় রোগী ও তাদের স্বজনদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এই ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দেয় সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন। এসব যানবাহনের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সড়কের ওপর যেসব যানবাহন রয়েছে তার প্রায় সবই সাভার মডেল থানার বিভিন্ন মামলার আলামত। মামলা নিষ্পত্তি বা আদালতের নির্দেশ না হওয়া পর্যন্ত আলামত হিসেবে আটক ওই সব যানবাহন মাসের পর মাস সেখানে পড়ে থাকে।

গত রোববার দেখা যায়, থানাস্ট্যান্ড-নামাবাজার সড়কের দক্ষিণ পাশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আর উত্তর পাশে সাভার মডেল থানা। মামলার আলামত হিসেবে সাভার থানায় জব্দ যানবাহন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশপাশের সড়কে রাখা। এর মধ্যে একটি কাভার্ড ভ্যানসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন রয়েছে। অন্য পাশেও কয়েকটি যানবাহন দাঁড়ানো ছিল। এসব যানবাহনের কারণে কিছু সময় পরপরই যানজট লেগে যাচ্ছিল।

হাসপাতালের পাশের এক দোকানি বলেন, দুই পাশে থানার গাড়ি আর ব্যক্তিগত গাড়ি রাখার কারণে হাসপাতালের মূল ফটক পর্যন্ত সড়ক সরু হয়ে যায়। আবার রিকশা ও ছোট গাড়ির কারণে মাঝেমধ্যে জটলা বেঁধে যায়। তখন রোগী নিয়ে আসা কোনো রিকশা ও অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালে ঢুকতে পারে না।

প্রাইভেটকারের চালক জামির হোসেন বলেন, কয়েক মাস আগে তিনি এক রোগী নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পথে মূল ফটকের সামনে যানজটে পড়েন। ১৫ মিনিট অপেক্ষার পর রোগীকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনেরা।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমজাদুল হক বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-সংলগ্ন সড়ক সংস্কারের পাশাপাশি থানার জব্দ যানবাহন সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরও কোনো কাজ হচ্ছে না। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েও ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, আলামত রাখার জন্য থানার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় হাসপাতালের পাশে রাখা হয়। রোগীদের সমস্যা হলে যানবাহন রাখার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে।