Thank you for trying Sticky AMP!!

সারা রাত রাস্তায় পড়ে ছিল মৃতদেহ

প্রতীকী ছবি

রক্তচাপ (প্রেশার) মাপতে বাড়ির পাশের একটি ফার্মেসিতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ফার্মেসিতে ঢোকার আগেই দরজার সামনে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যান। এরপর মুখ থেকে ফেনা বের হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ভেবে লাশ রাস্তায় ফেলেই চলে যান সবাই। এরপর সারা রাত ওখানেই ছিল লাশ।

এ বর্ণনা স্থানীয় বাসিন্দা ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর। ঘটনাস্থল গাজীপুরের টঙ্গীর আউচপাড়া। ওই নারীর নাম মিনারা বেগম। বয়স ৫৮-৬০ বছর। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে তাঁর বাড়ির পাশের একটি ফার্মেসিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মিনারা বেগমের বাসা ফার্মেসির পাশেই। তিনি আগে থেকেই ডায়বেটিসে আক্রান্ত। এর মধ্যে গত সোমবার সন্ধ্যায় শরীর বেশি খারাপ হলে প্রেশার মাপাতে যান ওই ফার্মেসিতে। এ সময় ফার্মেসিতে ঢোকার আগেই মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। এরপর সবাই করোনাভাইরাসের ভয়ে লাশের পাশ থেকে সরে যায়।

স্থানীয় লোকজন জানান, লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় কাউন্সিলর, নেতা-কর্মী ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর তাঁরা বিষয়টি গাজীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়কে জানান। দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একটি দল এসে ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। আজ বুধবার সকালে প্রশাসনের সম্মতিক্রমে লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।

মো. আকতার সরকার নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘করোনাসন্দেহে সারা রাত লাশ এখানে পড়ে ছিল। কিন্তু তাঁর আগে থেকে জ্বর, সর্দি বা কাশি ছিল না। আমরা এ বিষয়টি একটি ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে সবাইকে বলছি যাতে কোনো ধরনের আতঙ্ক না ছড়ায়।’

ফেসবুক লাইভের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, লাশটি পড়ে আছে ফার্মেসির ঠিক দরজার সামনে, নর্দমার ঢাকনার ওপর। মরদেহটি একটি সাদা চাদর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। আশপাশে কোনো লোকজন নেই।

স্থানীয় কাউন্সিলর মো. নাসির উদ্দিন মোল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন কেউ মারা গেলে স্বাভাবিকভাবেই সবার মাঝে আতঙ্ক কাজ করে। এখানেও তাই হয়েছে। তারপরও মারা যাওয়ার পর থেকে আমরা সার্বক্ষণিক লাশের তদারক করেছি। রাতের মাঝেই খবর দিয়ে নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করেছি। এখন সবার সম্মতিক্রমে লাশ দাফন কাফনের কাজ চলছে।’

টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, এলাকাবাসী ও আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে থেকে ওই নারীর করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ ছিল না। মূলত প্রেশার মাপতে এসে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে এ ঘটনা ঘটে। তারপরও এটা নিয়ে যেহেতু মানুষের মাঝে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে তাই লাশটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই নারী এখানে একা থাকতেন। স্বামী নেই। এক ছেলে আছেন, তবে তিনি যশোর থাকেন। এর মধ্যে পরিবারের কোনো লোকজন না আসায় এলাকাবাসীই নিজেদের তদারকিতে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করছেন।