সাড়ে ৪৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগের অডিট প্রতিবেদন চুরি
রংপুরের বদরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মু. মাজেদ আলী খানের বিরুদ্ধে ওঠা প্রায় সাড়ে ৪৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগের অডিট প্রতিবেদনসহ প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় ওই কমিটির আহ্বায়ক সুনীল চন্দ্র সরকার গতকাল শুক্রবার বদরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
ওই জিডি ও কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত ১ মে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কলেজের অভ্যন্তরীণ অডিট করার জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটি ২০১৯ সালের ৩০ জুন থেকে চলতি বছরের ১ এপ্রিল পর্যন্ত কলেজের আয়–ব্যয়ের অডিট সম্পন্ন করে। এতে ধরা পড়ে, ওই সময়ের মধ্যে কলেজ তহবিল থেকে অধ্যক্ষ মাজেদ আলী খান ৪৬ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৯ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। পরে অডিট কমিটি গত ১ জুন অধ্যক্ষ বরাবর প্রতিবেদনের অনুলিপি জমা দেয়। এ ছাড়া অডিট কমিটি প্রতিবেদনের মূল কপিসহ টাকা আত্মসাৎ করার প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র, কলেজের ছাত্রছাত্রীদের বেতন আদায়ের ও জমা খরচের রেজিস্টার অধ্যক্ষের অফিসকক্ষের আলমারিতে তালাবদ্ধ করে রাখে।
অডিট কমিটির আহ্বায়ক ও ওই সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুনীল চন্দ্র রায় অভিযোগ করে বলেন, ১৮ অক্টোবর অফিসকক্ষের ওই আলমারির তালা ভেঙে অডিট কমিটির দেওয়া মূল প্রতিবেদন, ছাত্রছাত্রীদের বেতন আদায়ের ও কলেজের জমা খরচের রেজিস্টার এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ করার প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র চুরি হয়েছে। এ ছাড়া ওই আলমারি থেকে কিছু খরচের ভাউচার সরিয়ে নতুন করে ভাউচার তৈরি করে সেখানে রাখা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, অধ্যক্ষ অপকর্ম ঢাকতে নিজে বা কাউকে দিয়ে আলমারি ভেঙে ওই কাগজপত্র সরিয়ে ফেলেছেন।
এ অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মাজেদ আলী খান বলেন, ‘অডিট কমিটি আলমারিতে কাগজপত্র রেখেছিল কি না, সেটা আমি জানি না। তবে অডিট করার সময় ওই কমিটিকে কলেজের ছাত্রছাত্রীদের বেতন আদায়ের রেজিস্টার ও জমা খরচের বহি প্রদান করা হয়েছিল। এসব বহি না পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। আমার বিরুদ্ধে অডিট কমিটির উত্থাপিত টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ সঠিক নয়।’
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ওই সরকারি কলেজের অফিসকক্ষের আলমারি থেকে কিছু কাগজপত্র খোয়া যাওয়া বিষয়ে থানায় জিডি হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।