Thank you for trying Sticky AMP!!

সিলেটে ঘুরতে এসে হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার প্রাঙ্গণে জালালি কবুতরের ওড়াউড়ি উপভোগ করছেন মানুষজন। আজ শুক্রবার বিকেলে

সিলেটের জল, পাহাড় আর চা–বাগানে পর্যটকদের ভিড়

সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ভিড় বেড়েছে পর্যটকদের। জল, পাহাড় আর চা–বাগান—সবখানেই সরব উপস্থিতি দর্শনার্থীদের। শুক্রবার ছুটির দিনে নানা বয়সী পর্যটকদের আনাগোনায় সরব হয়ে উঠেছে পর্যটনকেন্দ্রগুলো। এর চাপ পড়েছে নগরের অভ্যন্তরেও। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখতে ভিড় করছেন তাঁরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর ও শহরতলির চা–বাগানগুলোতে ছিল পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। এ ছাড়া শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরান (রহ.) মাজারেও ভক্ত-দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়।

করোনা পরিস্থিতির কারণে ধাপে ধাপে বন্ধ থাকার পর সরকারিভাবে গত ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়। সিলেটের হোটেল-মোটেলগুলোর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয় আগস্ট মাসের শেষ দিক থেকে। চলতি মাসের প্রথম থেকে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা কমে আসায় পুরোদমে সরব হয়েছেন পর্যটকেরা। সপ্তাহের বৃহস্পতি থেকে শনিবার পর্যন্ত হোটেল-মোটেলগুলোতে পর্যটকদের উপস্থিতি বেশি থাকে। সপ্তাহের অন্যান্য দিন পর্যটকদের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকে। পর্যটকদের উপস্থিতি বাড়ায় খুশি হোটেল-মোটেল ও পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

নগরের আম্বরখানা এলাকার ব্রিটানিয়া হোটেল অ্যান্ড পার্টি সেন্টারের কর্মকর্তা কাওসার চৌধুরী জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ প্রায় তিন মাস হোটেল বন্ধ রাখা হয়েছিল। এখন পুরোদমে চালু রয়েছে। সামাজিক অনুষ্ঠানও হচ্ছে। চলতি বছরের মধ্যে সম্প্রতি হোটেলে অতিথিদের উপস্থিতি বেড়েছে। শুক্রবার থেকে হোটেলের প্রায় ৯৮ শতাংশ কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে নগরের শাহজালাল (রহ.) মাজার ও শহরতলির মালনীছড়া, লাক্কাতুরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের সরব উপস্থিতি। পরিবার–পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন তাঁরা। মাজারে আসা ভক্ত ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের অধিকাংশই সিলেট জেলার বাইরে থেকে এসেছেন। অন্যদিকে চা–বাগান এলাকায় ঘুরতে যাওয়া দর্শনার্থীদের বেশ কিছু অংশ সিলেট নগর ও আশপাশের এলাকার।

সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে আজ শুক্রবার পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকায়

চা–বাগান এলাকায় ঘুরতে আসা নগরের মদিনা মার্কেট এলাকার বাসিন্দা রাজিউল করিম বলেন, ‘পরিবারের সদস্যরা বেশ কিছুদিন ধরে একঘেয়েমি কাটাতে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বলছিলেন। চা–বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করে আজ ভালো লাগছে।’

কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর এলাকায় ঘুরতে আসা ঢাকার বাসিন্দা লিটন চন্দ্র সাহা বলেন, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে বেড়াতে এসেছেন। প্রথম দিন জাফলং ও লালাখাল ঘুরেছেন। শুক্রবার রাতারগুল ও সাদাপাথর ঘুরছেন। সাদাপাথরের পানিতে নেমে প্রাণ জুড়িয়ে গেছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলার রাতারগুল পর্যটনকেন্দ্রের মাঝি সোনা মিয়া বলেন, সম্প্রতি রাতারগুলে পর্যটকদের উপস্থিতি বেড়েছে। তবে এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় ঘাটগুলোতে পানি কম। গত বুধবার থেকে ঘাটগুলোতে পানি কমে গেছে। এতে বনে প্রবেশের বেশ কিছু অংশ নৌকা ঠেলে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে রাতারগুলে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা আবার ফিরে যাচ্ছেন।

সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল আজ শুক্রবার। শহরতলির মালনীছড়া চা-বাগান ঘুরে দেখছেন পর্যটকেরা

ট্যুরিস্ট পুলিশ জাফলং সাব–জোনের পরিদর্শক মো. রতন শেখ বলেন, জাফলংয়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটকদের উপস্থিতি বেড়েছে। ট্যুারিস্ট পুলিশ পর্যটকদের নিরাপত্তা ও বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করছে। এ ছাড়া পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্য বলেন, সম্প্রতি সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের উপস্থিতি বেড়েছে। পর্যটকেরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। সে সঙ্গে পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথরের পানিতে সাঁতারে নেমে¯স্রোতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কার বিষয়ে পর্যটকদের সতর্ক করা হচ্ছে।