Thank you for trying Sticky AMP!!

সিস্টার লুসিকে ঈদ উপহার পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী

সিস্টার লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টকে প্রধানমন্ত্রীর ঈদের উপহার তুলে দিচ্ছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার

ব্রিটিশ ও বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব পাওয়া সিস্টার লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টকে ঈদ উপহার পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো এ উপহার তাঁর হাতে পৌঁছে দিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।

বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনের দক্ষিণ দিকটায় বারান্দার এক অংশে জরাজীর্ণ টিনের ছোট ঘর। ছোট একটি কাঠের চৌকি, কাঠের দুটি টেবিল। শোবার চৌকিতে পাতলা তোশক বিছানো, একটি বালিশ আর কম দামের কম্বল। পাশে শেলফে কিছু বই ও পুরোনো ডায়েরি। এটাই সিস্টার লুসির থাকার জায়গা।

গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসক তাঁর মা–বাবাকে সঙ্গে নিয়ে সিস্টার লুসির ছোট ঘরটিতে যান। এ সময় সেখানে জেলা প্রশাসককে স্বাগত জানান বিশপ সৌরভ ফলিয়া। পরে সিস্টার লুসি হল্টের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন। শুভেচ্ছা হিসেবে ফুল, ফল ও নগদ এক লাখ টাকা উপহার তুলে দেন জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, মানবদরদি সিস্টার লুসি হল্টের সব সময় খোঁজখবর রাখার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। জেলা প্রশাসন সব সময়ই লুসির পাশে ছিল এবং থাকবে।

লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট ৫৮ বছর ধরে বরিশাল ছাড়াও কাজ করেছেন যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে।

লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট স্বদেশ–স্বজনদের ভুলে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের মায়ায় এখানেই ৬০ বছর ধরে রয়েছেন। তিনি বাংলা বলেন, বাঙালিদের মতো শাড়ি পরেন, বাঙালিদের সেবা করে যাচ্ছেন। তাঁর অন্তিম ইচ্ছা, চিরকালের মতো মিশে যেতে চান বাংলার প্রকৃতিতে। তিনি নাগরিকত্ব চেয়ে বেশ কয়েকবার আবেদন করলেও তাতে সাড়া মেলেনি। পরে এ নিয়ে প্রথম আলোয় ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এলে তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ গণভবনে ডেকে নিয়ে তাঁর হাতে তুলে দেন এ দেশের নাগরিকত্ব।

সিস্টার লুসির জন্ম ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে। বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। দুই বোনের মধ্যে ছোট লুসি। তাঁর বড় বোন রুৎ অ্যান রেভা ফেলটন স্বামী ও তিন ছেলে নিয়ে ব্রিটেনেই বসবাস করেন। লুসি ১৯৪৮ সালে উচ্চমাধ্যমিক (দ্বাদশ) পাস করেন। তিনি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন। যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। এখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়াতেন। এরপর আর দেশে ফিরে যাননি। ৫৮ বছর ধরে বরিশাল ছাড়াও কাজ করেছেন যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে।

২০০৪ সালে অবসরে যান সিস্টার লুসি। ওই বছরই তিনি ফিরে আসেন বরিশালের অক্সফোর্ড মিশনে। এই অবসর জীবনেও দুস্থ শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ইংরেজি শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি এসব শিশুর জন্য দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহের কাজ করেন।