Thank you for trying Sticky AMP!!

সুরমা-কুশিয়ারার পানি কমছে, হঠাৎ বেড়েছে সারীর পানি

গত কয়েক দিনের পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে সুরমা নদীর পানি সিলেট নগরের কাজীরবাজার এলাকায় উপচে পড়েছিল। আজ কিছুটা কমেছে সুরমার পানি। বাজার থেকে পানি নেমেছে নদীতে। আজ রোববার দুপুরে তোলা। ছবি: আনিস মাহমুদ

সিলেটে সুরমা নদীর পর কুশিয়ারার পানিও কমছে। তবে পানি বাড়ছে সিলেটের সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিত সারী নদীর। আজ রোববার সকালে ও দুপুরে নদ-নদীর পানিপ্রবাহের তিনটি পরিমাপে কুশিয়ারার উৎসমুখের অমলসিদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা থেকে নেমে গেছে। পাঁচ দিন ধরে পানি বাড়ছিল কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে। সেখানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি কমছিল। তবে সারী নদীর পানি এর আগে কমতে শুরু করলেও আজ সকাল থেকে হঠাৎ আবার বাড়ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ডেইলি ওয়াটার লেভেল ডেটা সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছেন পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার। তিনি বলেছেন, প্রধান দুটি নদীর পানি কমায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে।

সিলেট অঞ্চলের দুটি প্রধান নদী সুরমা ও কুশিয়ারা। দুটি নদীর উৎসমুখ সীমান্ত এলাকায়। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসিদ এলাকায় কুশিয়ারার উৎসমুখ। সেখানে ভারতের বরাক নদের মোহনা থেকে কুশিয়ারা প্রবাহিত হয়েছে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের একটি অংশ দিয়ে। আর সুরমা কানাইঘাটের সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিত লোভার সঙ্গে মিলিত হয়েছে।

পাউবো জানায়, অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানির বিপৎসীমা গড় পানি সমতলের ওপর ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সেখানে গড় পানি সমতলের ১৫ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকালে সেখানে পানি বিপৎসীমা থেকে নেমে যায়। সকাল ৬টায় ১৫ দশমিক ৩৯ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ১৫ দশমিক ৩৬ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টায় ১৫ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।

কুশিয়ারা নদীর শেওলা ও শেরপুর পয়েন্ট দিয়ে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি এখনো বিপৎসীমার (গড় পানি সমতলের ওপর ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার) ওপরে রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় সেখানে পানি ছিল ৯ দশমিক ৯৮ সেন্টিমিটার ওপরে। আজ সকাল ৬টা ও ৯টায় ৯ দশমিক ৯৬ থেকে নেমে দুপুর ১২টায় ৯ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

গত কয়েক দিনের পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে সুরমা নদীর পানি সিলেট নগরের কাজীরবাজার এলাকায় উপচে পড়েছিল। আজ কিছুটা কমেছে সুরমার পানি। বাজার থেকে পানি নেমেছে নদীতে। আজ রোববার দুপুরে। ছবি: আনিস মাহমুদ

এদিকে সুরমা নদীর দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট শহর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার থেকে নেমে দুপুরে ১০ দশমিক ২৬ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা গড় পানি সমতলের ওপর ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। সেখানে গতকাল সন্ধ্যায় প্রবাহ ছিল ১২ দশমিক ৯৬ সেন্টিমিটার ওপরে। সকাল ৬টায় ১২ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ১২ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টায় ১২ দশমিক ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।

সিলেটের সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিত সারী নদীর জৈন্তাপুর উপজেলার সারীঘাট পয়েন্টে পানি পরিমাপ করা হয়। সেখানে নদীর পানির বিপৎসীমা গড় পানি সমতলের ওপর ১২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার। গতকাল সন্ধ্যায় সেখানে পানি ছিল ১০ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার ওপরে। আজ সকাল থেকে পানি বাড়ছে।

পাউবো জানায়, আজ সকাল ৬টায় ১০ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ১১ দশমিক শূন্য ৩ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টায় ১১ দশমিক শূন্য ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পানি। তবে সিলেটের অপর সীমান্ত নদী লোভার পানি কমছে। গতকাল সন্ধ্যায় ১৪ দশমিক শূন্য ৪ সেন্টিমিটার থেকে নেমে দুপুর ১২টায় ১৩ দশমিক ৮৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।

সিলেটে গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বন্যার সৃষ্টি হয়। সুরমা নদীর পানি কমলেও পুরোপুরি কমেনি হাওরের পানি। সিলেট-গোয়াইনঘাট সড়কে এখনো হাওরের পানি উপচে পড়ছে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তোলা। ছবি: আনিস মাহমুদ

সারী নদীর দুটি সংযোগ রয়েছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায়। একটি জৈন্তাপুরের লালাখাল, অন্যটি জাফলংয়ের গোয়াইন-পিয়াইন-ডাউকীর সঙ্গে। সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, সিলেট সদর উপজেলা হয়ে সারী চেঙ্গরখাল নদের মাধ্যমে মিলিত হয়েছে সুরমা নদীতে। সকাল থেকে পানি বাড়ায় সারী অববাহিকা এলাকায় আবার বন্যার শঙ্কা রয়েছে।

পাউবোর নদ-নদীর পানি পর্যবেক্ষণ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় সারীর পানি বাড়ছে। বৃষ্টি থামলে পানি কমবে।