Thank you for trying Sticky AMP!!

সুর-কথায় রাধারমণময় সন্ধ্যা

রাধারমণ দত্তের ১৮৬তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সংগীতানুষ্ঠানে গাইছেন শিল্পীরা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ মিলনায়তনে। ছবি: প্রথম আলো

‘বিনোদিনী গো তর বৃন্দাবন কারে দিয়া যাবি’ কিংবা ‘জলে যাইও না গো রাই, আইজ কালিয়ার জলে যাওয়ার জাতের বিচার নাই’—এমন সব গানই একের পর এক ভেসে বেড়িয়েছে মিলনায়তনে। আর শ্রোতারা বুঁদ হয়েছেন সুরে ও কথায়।

মাটিঘনিষ্ঠ মানুষের প্রাণ ছুঁয়ে যাওয়া এমন গানের স্রষ্টা সাধক কবি রাধারমণ দত্ত। তাঁর ১৮৬তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে গত শুক্রবার ‘ভাইবে রাধারমণ বলে’ শীর্ষক এই সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ‘মৌলভীবাজার সমমনা শিল্পীবৃন্দ’। সরকারি কলেজ মিলনায়তনে এ আয়োজন সাজানো হয়েছিল শুধুই রাধারমণ দত্তের গান নিয়ে।

ছুটির দিনে দুপুর থেকেই আকাশ মেঘলা। সমুদ্রঝড় ফণীর প্রভাবে কখনো বৃষ্টি, কখনো ঝোড়ো-দমকা বাতাস। সন্ধ্যায় সেই মাত্রা আরও বেড়েছে। তারপরও একে একে কাকভেজা হয়ে গান শুনতে মিলনায়তনে হাজির হন দর্শক-শ্রোতারা। প্রাকৃতিক অমন দুর্যোগকে তো আর এড়ানো যায় না। কিছুটা বিলম্বে সন্ধ্যার পর সাংস্কৃতিক সংগঠক ও শিল্পী নির্বেন্দু নির্ধূতের সঞ্চালনায় গানের ডালি নিয়ে উপস্থিত হতে থাকেন শিল্পীরা।

যুগ যুগ ধরে মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে থাকা রাধারমণের প্রচলিত-অপ্রচলিত গানগুলো অনুষ্ঠানে সুরের সাম্পানে যাত্রী হয়েছে। অনুষ্ঠানে ছিল ‘শ্যাম রূপে মন-প্রাণ নিল’, ‘বাঁশি রে পরানের বাঁশি, বাঁশি তুমি জ্বালিয়ো না’, ‘পিয়ারী পিরিতি করিস না’, ‘হীরার ময়না পাখি রে আমার সোনার ময়না পাখি’, ‘কালায় প্রাণটি নিল বাঁশিটি বাজাইয়া’, ‘আসবে শ্যাম কালিয়া, কুঞ্জ সাজাও গিয়া...’—এমন অসংখ্য গান। গান গেয়েছেন কেয়া দেব, জলি রায়, আছকান আহমদ, পিংকি দাস, মীর ইউছুফ, হ্যাপী দাস, শেখ জাহাঙ্গীর, সুদীপ্তা পাল মৌ, অশ্বিনী সিংহ, দেবযানী, বিনেন্দু ভৌমিক, নির্বেন্দু নির্ধূত, সুরঞ্জিত পাল, রাজু রায়, সুনীতা সিনহা, রথীন্দ্র বিশ্বাস, রমেন্দু দাশ, এসডি শান্ত, ফয়সল ফকির, উজ্জ্বল আচার্য প্রমুখ।

সংগীতানুষ্ঠানের এক ফাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে মঞ্চে আসেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সাংসদ নেছার আহমদ, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজলুল আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিনেন্দু ভৌমিক।

সাংসদ নেছার আহমদ বলেন, ‘আমরা বুঝি হাসন রাজা, লালন শাহ, শাহ আবদুল করিম—এঁদের, যাঁরা বাংলার প্রাণের সুর ও কথায় গান রচনা করেছেন। গান গেয়েছেন। তাঁদের গান শুনলে আমরা বুঝি আমরা বাঙালিয়ানার মধ্যে আছি। এই সব লোককবি আমাদের প্রাণের সুরকে তাঁদের গানে তুলে নিয়ে এসেছেন। বাঙালির প্রাণকে বাঁচিয়ে রাখতে তাঁদের গান বারবার শোনা দরকার। এ রকম আয়োজন বারবার করা প্রয়োজন।’

শিশু একাডেমীর সাংস্কৃতিক উৎসব

জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সব শিশুর মধ্যে লুক্কায়িত পূর্ণ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে মৌলভীবাজারে উদ্‌যাপিত হয়েছে সাংস্কৃতিক উৎসব। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলা শিশু একাডেমী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম। বক্তব্য দেন প্রবীণ সাংস্কৃতিক সংগঠক অপূর্ব কান্তি ধর, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুল হামিদ মাহবুব ও সাধারণ সম্পাদক সালেহ এলাহী কুটি, নাট্যকার আবদুল মতিন প্রমুখ। শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও অংশগ্রহণকারী শিশু সাংস্কৃতিক দলকে পুরস্কার প্রদান করেন অতিথিরা।