Thank you for trying Sticky AMP!!

সুস্থ পৃথিবীতে ফিরব ইতিহাসের অংশ হয়ে

>

করোনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছে আমাদের জীবনের বাস্তবতা। দেশ-বিদেশের পাঠকেরা এখানে লিখছেন তাঁদের এ সময়ের আনন্দ-বেদনাভরা দিনযাপনের মানবিক কাহিনি। আপনিও লিখুন। পাঠকের আরও লেখা দেখুন প্রথম আলো অনলাইনে। লেখা পাঠানোর ঠিকানা: dp@prothomalo.com

করোনার হানায় বিপর্যস্ত উহানে মানুষের আর্তনাদ-অসহায়ত্বের খবর পেয়ে (পত্রিকা-টিভি চ্যানেল) আঁতকে উঠতাম প্রথম দিকে। সেখানকার জনমানবহীন রাজপথের সঙ্গে কল্পনায় মিলিয়ে নিতাম বাংলাদেশকে। তখন পর্যন্ত ভাইরাসটির সংক্রমণের ক্ষমতা নিয়ে স্বচ্ছ কোনো ধারণা ছিল না, তাই অনেকটা নিশ্চিন্তই ছিলাম প্রিয় মাতৃভূমিকে নিয়ে।

আর সবার মতো অপেক্ষার প্রহর গুনে দিন কাটছে আমারও। অন্য অনেকের মতো ‘ভালো লাগে না’ রোগে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছি যেন দিনকে দিন। এসএসসি দিয়েছি এবার, হাতে পেয়েছি ফলাফলও। তবু যেন কলেজ মনে হচ্ছে দূর অস্ত। পড়ালেখাও হচ্ছে না ঠিকমতো। এ যেন এক নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে যাওয়া।

ইচ্ছে হচ্ছে রিপভ্যান উইংকেলের মতো হার্ডসন নদীর তীরে ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিই এই সময়টা। কোনো এক ভোরে ঘুম থেকে উঠে হয়তো দেখতে পাব করোনামুক্ত সুন্দর এক পৃথিবীকে। এখন রুটিন মেনে কোনো কিছুই করা হচ্ছে না আসলে। যত বেশি পারছি বই পড়ছি আর লেখা পাঠাচ্ছি পত্রিকায়। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার তাড়া নেই, তাড়া নেই সকালে ওঠারও। ফেসবুক মেসেঞ্জারেই কাটছে বেশির ভাগ সময়। বর্ষার বৃষ্টিতে ব্যায়াম করাও হচ্ছে না আর নিয়মিত।

আজ অনেক দিন হলো অনেক কাছের বন্ধুর সঙ্গেও দেখা করতে পারছি না, যাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে পারছি না নির্দ্বিধায় হাতটা বাড়িয়ে কাছে টেনে নিতে। বন্ধুদের উদ্দেশে ‘ভালো আছি ভালো থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’। যদি টাইম মেশিন থাকত, নিশ্চিত ২০২০ সালটা এড়িয়ে যেতাম। ঘরে বন্দী থেকে একটা উপলব্ধি হচ্ছে বন্য পশুদের চিড়িয়াখানায় আটকে রাখি আমরা, কখনো বুঝতেই চাইনি তাদের কেমন লাগে। ...এখন অনেকেই হয়তো বুঝবেন তাদের কষ্টটা। তাই বলে জীবন তো আর থেমে থাকছে না, জীবন চলছে আপন ছন্দে। অদৃশ্য পরজীবী এক শত্রুকে পরাজিত করে করোনামুক্ত পৃথিবীতে আমরা আবার ফিরব তবে ইতিহাসের অংশ হয়ে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যে ইতিহাস জানবে বই পড়ে, আমরা সেই ইতিহাসের অংশ।

*শিক্ষার্থী: ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ পার্বতীপুর, দিনাজপুর