সেতুনেই, সাঁকোই ভরসা
জামালপুরের সরিষাবাড়ীর চররৌহা গ্রামের পূর্ব পাশ দিয়ে প্রবাহিত ঝারকাটা নদী। একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে নদীটি পার হয় নারী, শিশুসহ ১৫টি গ্রামের মানুষ। সেখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী ও উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চররৌহা গ্রামের পূর্ব পাশ দিয়ে ঝারকাটা নদী প্রবাহিত। ১৫টি গ্রামের ৭০ হাজার মানুষের যাতায়াত সুবিধার জন্য নদীর ওপর একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন এলাকাবাসী। বিভিন্ন সময় সরকার ক্ষমতায় এসে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৯ বছর কাটল। আজও এলাকাবাসীর এ দাবি পূরণ হলো না। আজও সেতু নির্মাণ হলো না। আজও নদী পারাপারে মানুষের ভরসা বাঁশের সাঁকো।
চররৌহা ও চুনিয়াপটল গ্রামের লোকজন প্রতিবছর নিজেদের থেকেই অর্থ সংগ্রহ করে বাঁশ কিনে যাতায়াতের জন্য বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। সাঁকোটি ৮০ মিটার দীর্ঘ। বাঁশ দিয়ে নির্মিত সাঁকোটিতে মানুষ যাতায়াতের সময় মটমট শব্দ হয়। এতে নারী–শিশুরা এ সাঁকোর ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় পড়ে যাওয়ার আতঙ্কে ভোগে। এ ছাড়া কিছুদিন পরপর সাঁকোটি মেরামত করতে হয়। তা না হলে এটি পারাপারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
চররৌহা, চুনিয়াপটল, ছাতারিয়া, চর সরিষাবাড়ী, নান্দিনা, বাঘমারা, আদ্রা, জামিরা, নান্দিনা, দীঘলকান্দি, কোনারপাড়া, মাজারিয়া, সেংগুরিয়া, আতামারি ও সিধুলি—এই ১৫ গ্রামের মানুষ বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে যাতায়াত করে।
বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে প্রতিদিন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পশ্চিম পাশে আরএনসি উচ্চবিদ্যালয়ে পড়তে আসে।
প্রতিবছর বর্ষাকালে উজানের ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। তখন প্রবল স্রোতে বাঁশের সাঁকোটি ভেসে যায়। ফলে খেয়া দিয়ে ১৫টি গ্রামের লোকজন নদীটি পার হয়। আরএনসি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অন্তর মিয়া জানায়, মাঝেমধ্যে সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে তাদের বই–খাতা ভিজে যায়। ফলে নতুন বই–খাতা কিনতে হয় তাদের।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম বলে, ‘সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। আমাদের দাবি, একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হোক।’ চুনিয়াপটল গ্রামের বাসিন্দা শহীদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের আকুল আবেদন, বাঁশের সাঁকোটির জায়গায় একটি পাকা সেতু তৈরি করে ১৫টি গ্রামের মানুষের দাবি পূরণ করা হোক। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে এলাকাবাসীর পক্ষে আবেদনও করা হয়েছে।’
সেংগুরিয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম বলেন, ভোটের আগে যিনি আসেন, তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত হলে সেতুটি নির্মাণ করে দেব’। কত ভোট গেল, সেতু আর নির্মাণ করা হলো না।
নান্দিনা গ্রামের আবদুল মোতালিব বলেন, সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে ছেলেমেয়েদের বই–খাতা ভিজে যায়। অনেকে ব্যথা পায়। এতে দুর্ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা রয়েছে। আরএনসি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ এস এম জুলফিকুর রহমান বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এই সাঁকো দিয়ে কষ্টে পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে।’
সাতপোয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, ঝারকাটা নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হলে ১৫টি গ্রামের মানুষ এ ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে।
আরও পড়ুন
-
নাইজারে মার্কিন বাহিনীর অবস্থান থাকা ঘাঁটিতে রুশ সেনাদের প্রবেশ
-
প্রথম টি–টোয়েন্টি: তানজিদের অভিষেক, টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
-
সফর বন্ধের ঘোষণা দিয়ে সাড়ে তিন মাসেই বিদেশ গেলেন প্রতিমন্ত্রীসহ ২৩ জন
-
উপজেলা চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে বদির গুলি, থানায় অভিযোগ
-
আমেথি থেকে সরে শেষ মুহূর্তে কেন রায়বেরেলি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন রাহুল