Thank you for trying Sticky AMP!!

সেতু দ্রুত চালু করা দরকার

সামছুল হক

একটা দেশের উন্নয়নের জন্য নির্ভরযোগ্য ও দ্রুতগতির অবকাঠামো দরকার। আর এটা সম্ভব সেতুর মাধ্যমে নদীগুলোকে সংযুক্ত করার মাধ্যমে। আমাদের দেশটি পদ্মা–যমুনা নদী দিয়ে দ্বিখণ্ডিত। বঙ্গবন্ধু সেতুর মাধ্যমে উত্তরের সঙ্গে নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। এর সুফল উত্তরাঞ্চলের মানুষ পাচ্ছে।

দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে নির্ভরযোগ্য ও দ্রুত যোগাযোগের বাধা পদ্মা নদী। কম পানিতে ফেরি চলে না। বেশি স্রোত থাকলেও চলাচল ব্যাহত হয়। ঘন কুয়াশায় ফেরি ও লঞ্চ বন্ধ থাকে। সব ঠিক থাকার পরও ফেরিঘাটে ভাঙনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেলে এই সমস্যা আর থাকবে না।

একটা সেতু শুধু দুই পাড়কেই যুক্ত করে। দুই পাড়ের বিপুল মানুষকে এর সুফল দিতে হলে সমন্বিত উন্নয়ন দরকার। খুশির বিষয় হচ্ছে, পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে সমন্বিত উন্নয়ন হয়েছে, আরও হচ্ছে। পদ্মা সেতু ঘিরে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হয়েছে। দুই পাড়ে রেল সংযোগের প্রকল্প চলছে। এখন যত দ্রুত সেতু চালু হবে, তত মানুষ এর সুফল পেতে থাকবে। মানুষ নিজে অবকাঠামো নির্মাণ করতে পারে না। সরকারকে অবকাঠামো নির্মাণ করে দিতে হয়। যেখানে অবকাঠামো, সেখানেই বিনিয়োগ ভিড় করে। তখন মানুষ নিজেই নিজের ভাগ্য গড়ে নেয়।

পদ্মা সেতুর মূল খাঁচাটা হয়ে গেছে। এর মাধ্যমে মূল চ্যালেঞ্জও পার হওয়া গেছে। পাইল বসানো, পিলার (খুঁটি) নির্মাণ এবং স্প্যান বসানো—এসব গায়ে–গতরে খেটে হয় না। এর সঙ্গে জটিল কারিগরি বিষয় থাকে। এ ছাড়া নদীর নাব্যতা না থাকলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। স্প্যান প্রস্তুত, কিন্তু নদীতে ঘন কুয়াশা। ফলে স্প্যান তোলা গেল না। নদীভাঙনে কাজের ক্ষতি হয়। এখন আর সে সমস্যাটা হবে না। পুরো কাঠামো দাঁড়িয়ে যাওয়ার কারণে দ্রুত কাজ শেষ করার পথ সুগম হয়ে গেছে। এখন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ চাইলে নিজের মতো করে কাজ করতে পারবে। লোকবল বাড়িয়ে, বেশি বেশি দল গঠন করে দ্রুত কাজ শেষ করা যাবে।

পদ্মা সেতুতে যানবাহনের পাশাপাশি রেলও চলবে। এখানে সরকারের দুটি বিভাগ কাজ করছে। তাদের মধ্যে সমন্বয় দরকার আছে। সমন্বয় থাকলে কাজের গতি বেড়ে যাবে। জটিলতা কমবে। সেতুর দুই পাড়ে রেলের ভায়াডাক্টের উচ্চতা এবং খুঁটির অবস্থান নিয়ে সেতু বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কিছুটা জটিলতা দেখা দিয়েছে। রেল ভায়াডাক্টের নকশায় কিছুটা পরিবর্তন এনে এর সমাধান হওয়ার পথে। ভবিষ্যতে জটিলতা এড়াতে এবং কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি থাকা উচিত।

নদীশাসন একটা বড় কাজ। বর্ষাকালে নদীশাসন কিছুটা কঠিন। গত বছর মাওয়ায় যেভাবে ভাঙন হয়েছে, সেটা একটা সংকেত। আগামী বছর নদীর মূল প্রবাহ জাজিরা প্রান্তে সরে যাওয়ার পূর্বাভাস আছে। যদিও এতে সেতুর কোনো ঝুঁকি নেই। তারপরও নদীভাঙন থেকে সতর্ক হওয়ার দরকার আছে। যত দ্রুত সম্ভব নদীশাসনের কাজটা শেষ করতে হবে।

নির্মাণকাজের জন্য শুষ্ক মৌসুম খুবই অনুকূল। চলতি শুকনো মৌসুমটা পুরোপুরি কাজে লাগানোর সর্বাত্মক চেষ্টা থাকা দরকার।