Thank you for trying Sticky AMP!!

সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের পাশে তালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে রাখা বালুর স্তূপ। গত মঙ্গলবার

সড়ক দখল করে বালুর স্তূপ, দুর্ভোগে মানুষ

বালু নিয়ে বিড়ম্বনা সহ্য করতে না পেরে জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন দিয়েও প্রতিকার মেলেনি।

সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কসহ সাতক্ষীরা শহরের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে বা সড়কের অংশ দখল করে দিনের পর দিন বালু ফেলে রাখার ফলে চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট–বড় দুর্ঘটনা। অভিযোগ করেও মিলছে না প্রতিকার।

গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের পাশের বিনেরপোতা পাওয়ার হাউসের সামনে, তালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে যুব উন্নয়ন অফিসের সামনে, উপকর কমিশনারের অফিসের সামনে, সদর হাসপাতালের প্রধান ফটকের বিপরীতে, বাইপাস সড়কের ২০টি স্থানে, সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়কের শহরের হাটের মোড়, শহীদ রীমু সরণির ফুড অফিস মোড়, শহীদ নাজমুল সরণির জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনের ফুটপাত ও সড়ক দখল করে বালু ও নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা হয়েছে।

তালতলা মোড়ের হোটেল ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান, সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কের দক্ষিণ তালতলা মসজিদের সামনে থেকে গোপীনাথপুর তিন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সড়কে সংস্কারকাজ করার জন্য বরাদ্দ পেয়েছেন সাতক্ষীরার প্রভাবশালী ঠিকাদার ইকবাল জমাদ্দার। এ কাজ করার জন্য ওই ঠিকাদার এক মাসের বেশি সময় ধরে তালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাচীরের সামনে থেকে উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সড়কের অংশ দখল করে বালু রেখেছেন। সড়কের পাশে বালু রাখার কারণে গাড়ি চলাচলের সময় বালু উড়ছে। একটু ঝোড়ো বাতাস হলে অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়। এর ফলে এখানে দোকান খোলা রাখা যেমন দুষ্কর হয়েছে, তেমনি প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।

গত রোববার সকালে তালতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে সাইকেলে করে যাচ্ছিলেন কৈখালি গ্রামের আবদুল কাদের (৬০)। রাস্তাজুড়ে বালু রাখার কারণে একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁর সাইকেলকে ধাক্কা দিলে তিনি আহত হন। দুই পা ভেঙে বর্তমানে তিনি শয্যাশায়ী। গত শনিবার সকালে ওই বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে সাইকেল নিয়ে রাস্তায় ওঠার পরপরই মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মারাত্মক জখম হন মাগুরা তালতলার আহাদ আলীও (৬২)। তিনি বর্তমানে খুলনা সিটি মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া তালতলা উচ্চবিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তাজুড়ে বালু ফেলার কারণে ইতিমধ্যে দুর্ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থীও আহত হয়েছে।

তালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মমতাজ জাহান ও তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মো. আজিম জানায়, শ্রেণিকক্ষের জানালার পাশের রাস্তায় বালু থাকায় দীর্ঘদিন ধরে তারা ঠিকমতো ক্লাস করতে পারছে না। বালু উড়ে চোখেমুখে পড়ছে।

ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ওবায়দুল্লাহ বলেন, বালু নিয়ে বিড়ম্বনা সহ্য করতে না পেরে তিনি সম্প্রতি জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিকার মেলেনি।

তালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুন বলেন, প্রায় দেড় মাস রাস্তার ধারে বালু রেখে দেওয়ায় ক্লাস করা যাচ্ছে না। জানালা দিয়ে বাতাসের সঙ্গে বালু ঢুকছে। তিনি ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম স্থানীয় প্রশাসনে কথা বলেও কোনো প্রতিকার পাননি। বিষয়টি তিনি শিক্ষা কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন।

সাতক্ষীরা জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক আশিষ কুমার মণ্ডল বলেন, তাঁর অফিসের সামনে যিনি বালু রেখেছেন, তাঁর নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করে কথা বলে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেবেন।

সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজামউদ্দিন রাস্তার ওপর বালু রাখার ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে এবং পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে স্বীকার করে বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তিনি থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. গোলাম কবীর বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।