Thank you for trying Sticky AMP!!

সড়ক প্রশস্ত হয়, খুঁটি সরে না

সড়ক প্রশস্ত হলেও আগের স্থানে রয়ে গেছে বিদ্যুতের খুঁটি। গত শুক্রবার বিকেলে চকবাজার এলাকায়। জুয়েল শীল

মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট মোড়—প্রায় এক কিলোমিটারের এই সড়কের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে ২০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি। একটু পরপরেই সেসব খুঁটির অবস্থান। ফলে সড়ক প্রশস্ত হলেও সুফল নেই। যানজট লেগে আছে আগের মতোই। খুঁটিগুলোর কারণে নতুন করে তৈরি হয়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

শুধু এ সড়ক নয়, এ রকম দৃশ্য দেখা গেছে নগরের সিরাজউদ্দৌল্লা সড়ক, মোহরা ভারী শিল্প এলাকার সড়কের দুই পাশ, চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ সড়ক এলাকা, চকবাজার, মোগলটুলিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায়। এসব সড়কের প্রশস্তকরণ কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগে। কিন্তু সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরানো হয়নি।

পিডিবি সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলীকে পিডিবির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই চিঠিতে সড়ক প্রশস্তকরণের প্রকল্প হাতে নেওয়ার সময়েই খুঁটি সরানোর বিষয়েও অর্থ বরাদ্দ রাখতে অনুরোধ করা হয়।

কিন্তু পিডিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, মূলত পিডিবির মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর নিয়ম হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে চসিক ও সিডিএর ঠিকাদারেরা পিডিবির সহযোগিতা নেন না। শুধু শাটডাউনের (বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ) আবেদন করে নিজেরাই খুঁটি সরিয়ে নেন। এটার মূল কারণ পিডিবিকে দিয়ে খুঁটি সরানো হলে নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু নিজেরা নিজেদের মতো করলে খরচ কম পড়ে। এসবের কারণে মূলত খুঁটিগুলো সরানো নিয়ে টানাটানি চলে।

গতকাল শনিবার বিকেলে মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটি প্রায় পাঁচ হাত করে প্রশস্ত হলেও এর কোনো সুফল মিলছে না। খুঁটিগুলোর কারণে আগের মতোই যানজট লেগে ছিল। এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী বাসচালক মোহাম্মদ শহীদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘উড়ালসড়কের কারণে এই সড়কটি আগে থেকেই যানজটপ্রবণ। তাই সড়ক সংস্কার হচ্ছে দেখে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু সড়ক প্রশস্ত হলেও বৈদ্যুতিক খুঁটি আগের জায়গায় রয়ে গেছে। এখন যানজটের সঙ্গে তৈরি হয়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।’

এ সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের পরিচালক মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেশ কিছু খুঁটি রয়ে গেছে। এগুলো সরানোর উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু শাটডাউন না পাওয়াসহ নানা কারণে সরানো যায়নি। তবে ভবিষ্যতে পিডিবি এগুলো সরিয়ে নেবে।’

অন্যদিকে মোহরা ভারী শিল্প এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটির কারণে নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয় চায়ের দোকানি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ওই সড়ক দিয়ে নিয়মিত ট্রাকসহ ভারী ওজনের গাড়ি চলাচল করে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। একই হাল অন্যান্য যেসব জায়গায় সড়কের ওপর খুঁটি রয়েছে সেসব এলাকায়ও।

নগরের বিভিন্ন সড়কের ওপরে বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, সড়কের ওপর থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরিয়ে নিতে পিডিবিকে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজন হলে তা চসিক সংস্থান করবে।

তবে নিয়ম অনুযায়ী চসিক কিংবা সিডিএ আবেদন করলে এবং নির্ধারিত ফি জমা দিলে অবশ্যই বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পিডিবির সহকারী প্রধান প্রকৌশলী ইমাম হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি–দুটি খুঁটি হলে আমরা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নিই। কিন্তু অনেকগুলো খুঁটি হলে তো সরিয়ে নেওয়া সম্ভব না। কারণ সে ক্ষেত্রে খরচের একটি বিষয় জড়িত আছে।’