Thank you for trying Sticky AMP!!

হত্যা মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে আসামির হুমকি

সাতক্ষীরা জেলার মানচিত্র

সাতক্ষীরায় কলেজছাত্র রাসুল আহমেদ জিম (২২) হত্যা মামলার বিচারকাজ থমকে আছে। দীর্ঘ এক বছরেও বিচারকাজের অগ্রগতি নেই। এর মধ্যে প্রধান আসামি জামিনে মুক্ত হয়ে বাদীর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাদী ও নিহতের বাবা শেখ হেমায়েত হোসেন। বাদী বলেন, প্রধান আসামি জাহিদ হাসানকে জামিন পাওয়ার পর তাঁর শ্বশুর এম এ সিদ্দিক ও তাঁর একমাত্র মেয়ে নামিয়াকে হত্যার হুমকি দিয়ে বলছেন, ‘একটা হত্যা করলেও যে অপরাধ, ১০টা হত্যা করলেও একই অপরাধ।’

শেখ হেমায়েত হোসেন তাঁর ছেলের হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে আজ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে এই সংবাদ সম্মেলনে জিম হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে তাঁর বাবা প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আসামি জাহিদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রাসুলকে হত্যার ঘটনায় জাহিদের স্ত্রী সাম্মী আক্তার টুনির (২০) প্রত্যক্ষভাবে সহায়তার কথা উঠে আসে। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক হেদায়েত হোসেন জাহিদ হাসান ও তাঁর স্ত্রী সাম্মী আক্তার টুনির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে খুলনা শহরের ফুলবাড়িগেট এলাকার বাসিন্দা হেমায়েত হোসেন উল্লেখ করেন, তাঁর ছেলে রাসুল আহমেদ জিম সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের সম্মান প্রথম বর্ষের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। সাতক্ষীরা শহরে লস্করপাড়া এলাকার নানা এম এ সিদ্দিকের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করতেন জিম। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি তাঁকে অপহরণ করা হয়। পরদিন ২১ জানুয়ারি হেমায়েত হোসেন সাতক্ষীরা সদর থানায় অপহরণের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরই সূত্র ধরে পুলিশ মুঠোফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে ওই দিনই সাতক্ষীরা শহরের চালতেতলা বাগানবাড়ি এলাকা থেকে লিটনের বাড়ির ভাড়াটিয়া জাহিদ হাসানকে (২৪) আটক করে। পরে তাঁর স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাঁর ভাড়া বাড়ির চত্বর থেকে রাসুলের লাশ মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় ২২ জানুয়ারি হেমায়েত হোসেন বাদী হয়ে জাহিদ হাসানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় পুলিশ আসামি জাহিদ হাসানকে গ্রেপ্তার দেখায়। আসামি জাহিদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রাসুলকে হত্যার ঘটনায় জাহিদের স্ত্রী সাম্মী আক্তার টুনির (২০) প্রত্যক্ষভাবে সহায়তার কথা উঠে আসে। ফলে সাম্মীকেও আসামি করা হয়। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক হেদায়েত হোসেন জাহিদ হাসান ও তাঁর স্ত্রী সাম্মী আক্তার টুনির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলাটি কাজক্রম কীভাবে চলবে, তা আদালতের এখতিয়ার।
মো. আসাদুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), সাতক্ষীরা সদর থানা

হেমায়েত হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, মামলাটি ছয়বার আদালতে দিন ধার্য হলেও তিনি জানতে পারেননি। এ ছাড়া ইতিমধ্যে এ মামলার প্রধান আসামি জাহিদ হাসানকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি জামিন পাওয়ার পর তাঁর শ্বশুর এম এ সিদ্দিক ও তাঁর একমাত্র মেয়ে উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী নামিয়াকে হত্যার হুমকি দিয়ে বলেছেন ‘একটা হত্যা করলেও যে অপরাধ, ১০টা হত্যা করলেও একই অপরাধ।’ এ অবস্থায় তাঁর পরিবার শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে বলে জানান হেমায়েত হোসেন।

মামলার প্রধান আসামি জাহিদ হাসানের সঙ্গে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, নিহত জিমের বাবা শেখ হেমায়েত হোসেন তাঁর শ্বশুর ও মেয়েকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আজ বেলা তিনটার দিকে থানায় হাজির হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলার ধীরগতির বিষয়ে তিনি বলেন, মামলাটি কাজক্রম কীভাবে চলবে, তা আদালতের এখতিয়ার।