Thank you for trying Sticky AMP!!

১৩ বছর পর ধর্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, সন্তানকে ওয়ারিশের স্বীকৃতি

আদালত

রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় এক কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় ১৩ বছর পর সাজার রায় এসেছে। আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনায় জন্ম নেওয়া সন্তানকে ওয়ারিশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ভরণপোষণ নিশ্চিতের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার বেলা দেড়টার দিকে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২-এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় দেন। এ সময় অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নারী ও শিশু নির্যাতন আদালত-২-এর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জাহাঙ্গীর হোসেন তুহীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাসিন্দা ওই কিশোরীকে (ঘটনার সময় বয়স ১৪) প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন প্রতিবেশী ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম (তৎকালীন ২২ বছর বয়স)। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন শফিকুল। ঘটনার দিন ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবর বিকেলে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন শফিকুল। পরে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। ওই কিশোরীর দিনমজুর বাবা অনেক আগেই দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীকে রেখে অন্যত্র চলে যান।

২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ওই বাড়িতে গিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন শফিকুল ও তাঁর স্বজনেরা। পরবর্তী সময়ে ধর্ষণের ঘটনা এবং সন্তানের স্বীকৃতি অস্বীকার করলে প্রায় চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ওই বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি পীরগাছা থানায় মামলা করতে যায় ভুক্তভোগীর পরিবার। থানা থেকে তাঁদের আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে মেয়েটি নিজে বাদী হয়ে ২০০৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে শফিকুলসহ তাঁর বাবা মজিবর রহমান, চাচা মমতাজ উদ্দিন ও ফুফু নজিরন বেগমকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা চলাকালে মজিবর মারা যান। ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় ওই কিশোরী। এর মধ্যে শফিকুলও অন্যত্র বিয়ে করে সংসার শুরু করেন।

পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশে ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুর এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দীর্ঘ ১৩ বছর পর সোমবার এ রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে অপর দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২-এর পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং ধর্ষকের ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তির অংশীদারত্বের রায় দিয়েছেন বিচারক।