Thank you for trying Sticky AMP!!

২০০ টাকা নিয়ে শুরু, এখন আয় লাখ টাকা ছাড়িয়ে

টানাপোড়েনের জীবন টেনে নিতে নানা জায়গায় চাকরি করেছেন জয়শ্রী ধর। কিন্তু অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। তবে দমে যাননি তিনি।

জয়শ্রী ধর রাঙামাটির বাসিন্দা। তাঁর জীবনসংগ্রাম সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। মা–বাবার অসুস্থতার কারণে পড়াশোনা থেমে যায় মাধ্যমিকেই। অভাব-অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। টানাপোড়েনের জীবন টেনে নিতে নানা জায়গায় চাকরি করেছেন। কিন্তু অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। তবে দমে যাননি তিনি। ২০০৬ সালে মাত্র ২০০ টাকার পুঁজিতে শুরু করেন চাদর তৈরির ব্যবসা। ১৫ বছরের ব্যবধানে এখন তাঁর সঙ্গে কাজ করছেন আরও ২৫ নারী। মাসে আয় লাখ টাকার ওপর।

জয়শ্রীর মতো উদ্যোগী, সাহসী ও প্রতিবাদী চট্টগ্রাম জেলার পাঁচ জয়িতাকে সংবর্ধনা দিয়েছে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, চট্টগ্রাম ও মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর। আজ বুধবার দুপুরে নগরের জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রেষ্ঠ পাঁচ জয়িতার নাম ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি তাঁদের সম্মাননা দেওয়া হয়।

রাঙামাটির জয়শ্রী ছাড়া সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তাসলিমা সুলতানা খানম, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের জন্য কুমিল্লার মোছা. সুফিয়া আক্তার, সফল জননী হিসেবে চট্টগ্রামের রাউজানের মনোয়ারা বেগম ও নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করায় লক্ষ্মীপুরের শিরিন আক্তারকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাঁদের প্রত্যেককে একটি ক্রেস্ট ও সম্মানপত্র দেওয়া হয়।

সংবর্ধনা ও আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী রওশন আক্তার। তাঁরা দুজনই অনলাইনে যুক্ত ছিলেন। চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাকির হোসেন খান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইপসার উপপরিচালক নাছিম বানু প্রমুখ।

বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ

প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা বলেন, আদিকাল থেকেই নারীরা সমাজে শোষিত, নিপীড়িত। অর্থনৈতিকভাবেও বৈষম্যের শিকার। কিন্তু পরিস্থিতি এখন অনেকটা বদলে গেছে। এখন নারীরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। করোনা মহামারিতে অনেক নারী ঘরে বসে অনলাইনে আয়ের চাকা সচল রেখেছেন। এ ছাড়া নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তেঁতুলতত্ত্বের যিনি উদ্যোক্তা, তাঁর বাড়িও চট্টগ্রাম। তিনি বর্তমানে বেঁচে নেই। তাই তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। কিন্তু তাঁর তেঁতুলতত্ত্বে আসলে কী ছিল? তাঁর তেঁতুলতত্ত্বে ছিল, নারীরা ঘর থেকে বের হতে পারবে না। নারীরা লেখাপড়া করতে পারবে না। নারীরা শুধু স্বামী-সন্তানের খেদমত করবে। সেই তেঁতুলতত্ত্ব সমর্থন করেছিল বিএনপি। কিন্তু পুরুষের তুলনায় নারীর অগ্রগতি লক্ষ করলে দেখা যায়, ২০০৬ সালে অগ্রগতি ছিল ৬২ শতাংশ। আর ২০১৮ সালে পুরুষের তুলনায় নারীর অগ্রগতি ৭২ শতাংশ। ফলে নারীরা বসে নেই। এগিয়ে যাচ্ছে। সফল হচ্ছে। জয়িতারাই সফলতার প্রমাণ।’