Thank you for trying Sticky AMP!!

৩০০টির বদলে ৩০টি ইয়াবা বড়ি দেখিয়ে জামিন

জয়পুরহাটের একটি মাদক মামলার ভুয়া এজাহার ও জব্দ তালিকা তৈরি করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেওয়ার ঘটনায় আদালতের কর্মচারীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির শামশুল হুদা বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার বালিঘাটা বাজারের মহাজের কলোনির মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আয়নাল হোসেন ওরফে রানা (২৮), জয়পুরহাট সদর উপজেলার পশ্চিম পারুলিয়া গ্রামের মোজাহার আলীর ছেলে আইনজীবীর সহকারী আমিনুল ইসলাম (৩৫) ও বগুড়া জেলার শাজাহানপুর থানার ডমনপুকুর গ্রামের মো. রেজুয়ান্নবীর ছেলে মো. মোজাহিদুল ইসলাম (৪০)। মোজাহিদুল ইসলাম ঘটনার সময় জয়পুরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

মামলার এজাহার ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাঁচবিবি থানার পুলিশের একটি দল টহল দিচ্ছিল। এ সময় তারা উপজেলার বালিঘাটা বাজার (মহাজের কলোনি, ঢাকাপট্টি) এলাকার মো. আয়নাল হোসেনকে (২৮) আটক করে। পুলিশ আয়নাল হোসেনের পরনের জিনস প্যান্টের ডান পকেট থেকে নীল রঙের ছোট পলিথিনের মধ্যে ৩০০টি ইয়াবা বড়ি জব্দ করে।

এ ঘটনায় পাঁচবিবি থানার এএসআই মো. দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পাঁচবিবি থানা একটি মামলা করেন। আসামি মো. আয়নাল হোসেনের পক্ষে সংশ্লিষ্ট আদালতে একাধিকবার জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করেন। মামলাটি পরবর্তী সময়ে ৩৮৯/২০২০ নম্বর দায়রা মামলা হিসেবে নিবন্ধিত করা হয়। জেলা ও দায়রা জজ আদালতেও তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।

মামলার বাদী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পেশকার শামশুল হুদা বলেন, ওই মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জামিন আবেদন নামঞ্জুরের আদেশ নিয়ে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করা হয়। হাইকোর্টে জামিন আবেদনের সঙ্গে দেওয়া মামলার এজাহার কপি ও জব্দ তালিকা (জাবেদা নকল) দাখিল করা হয়েছিল। ওই এজাহার ও জব্দ তালিকায় ৩০০টি ইয়াবার পরিবর্তে ৩০টি দেখানো হয়েছিল। হাইকোর্ট আসামিকে জামিন দেন।

শামশুল হুদা বলেন, এরপর জেলা জজ আদালতে জামিন আদেশ দাখিল করে আসামি কারাগার থেকে ছাড়া পান। পরে হাইকোর্ট মামলার নথিপত্র তলব করেন। মামলার মূল এজাহার ও জব্দ তালিকার কপির সঙ্গে হাইকোর্টে দাখিল করা এজাহার ও জব্দ তালিকায় ইয়াবার সংখ্যার গরমিল দেখতে পান। হাইকোর্ট এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য জয়পুরহাটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজকে নির্দেশ দেন। এরপর আজ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

জয়পুরহাট সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, একটি মাদক মামলার এজাহার ও জব্দ তালিকা জাল করে এক আসামি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির শামশুল হুদা বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।