৯ মাসের ব্যবধানে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ যেভাবে হয়ে গেল ‘হত্যাকাণ্ড’
স্কুলশিক্ষক নাসির হাওলাদার গত বছরের ২৩ মে হঠাৎ মারা যান। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মনে করে স্বজনেরা তাঁকে দাফন করেন। কিন্তু ঘটনার প্রায় ৯ মাস পর স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, একটি মুঠোফোনের কল রেকর্ড থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন যে নাসিরকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নাসিরের স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিক জড়িত। ইতিমধ্যে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নাসির হাওলাদার বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের গয়েজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। গ্রেপ্তার দুজন হলেন নাসিরের স্ত্রী ফাতেমা মিতু (২৪) ও সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের গুলবুনিয়া এলাকার বারেক মিয়ার ছেলে রাজু মিয়া (২০)। নাসির ও ফাতেমা দম্পতির আট বছরের একটি মেয়ে ও পাঁচ বছরের একটি ছেলে আছে।
নাসিরের বড় ভাই জলিল হাওলাদার গতকাল বুধবার হত্যার অভিযোগে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন। রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ ফাতেমা ও রাজুকে গ্রেপ্তার করে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, ‘আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মুঠোফোনের কল রেকর্ড যাচাই করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। এরপর অভিযান চালিয়ে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি।’
এজাহারে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বরগুনা শহরের একটি দোকানে মুঠোফোন মেরামত করতে দেন রাজু। সেখান থেকে তাঁর মুঠোফোনটি হারিয়ে যায়। ওই মুঠোফোনে নাসিরকে হত্যার পরিকল্পনা এবং পরে রাজু ও ফাতেমার কথোপকথনের রেকর্ড জমা ছিল। ওই রেকর্ড নাসিরের স্বজনদের হাতে আসে। তখন তাঁরা জানতে পারেন, নাসিরকে হত্যা করা হয়েছে।
মামলার বাদী জলিল হাওলাদার বলেন, ‘ফাতেমার কাছ থেকে আমার ভাইয়ের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর পেয়েছিলাম। তখন আমাদের কোনো সন্দেহ হয়নি। স্বাভাবিক নিয়মেই নাসিরকে দাফন করি। ৯ মাস পর ফাতেমা ও রাজুর কথোপকথনের বেশ কয়েকটি রেকর্ড পাই। সেখানে নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের কথোপকথন রয়েছে। তখন আমরা নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার বিষয়ে নিশ্চিত হই।’