Thank you for trying Sticky AMP!!

'দরিদ্র ও প্রতিবন্ধীদের যাতায়াত ফ্রি'

প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় থেকে শাসনগাছা পদচারী–সেতুর ওপর দিয়ে সিনএনজিচালিত অটোরিকশা চালান তিনি। এ সময় শারীরিক প্রতিবন্ধী যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নেন না। দুই বছর ধরে তিনি এ সেবা দিয়ে আসছেন। তাঁর নাম মো. জুয়েল।

গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের কান্দিরপাড় মোড়ে দেখা হয় জুয়েলের সঙ্গে। তাঁর সবুজ রঙের অটোরিকশার উপরিভাগে প্লাস্টিকের ঘাস রয়েছে। তার ওপর লেখা আছে, ‘গরিব, অসহায় ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য যাতায়াত ফ্রি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জুয়েল বলেন, ‘যাঁদের হাত-পা নেই, চলাফেরা করতে অক্ষম—এমন প্রতিবন্ধী মানুষের কোনো কামাই (রোজগার) নেই। তারা নিজেরা চলতে পারে না। এটা আমাকে কষ্ট দেয়। তখন ভাবলাম, আমার নিজেরই তো অটোরিকশা। অন্যদের মতো ভাড়া নিয়ে চালাতে হয় না। তাই ভাবলাম, প্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু করা দরকার। এরপর সিদ্ধান্ত নিই, বিনা ভাড়ায় প্রতিবন্ধীদের পার করব। সেই ভাবনা থেকেই কাজটা শুরু করি। প্রতিদিনই এই রকম যাত্রী থাকে। গরিব যাত্রীদেরও আমি বিনা পয়সায় পার করি। এটা মায়া থেকেই করছি। এতে আমার ভালো লাগে। মন ভালো হয়ে যায়। আমি সামান্য মানুষ। সাধ্যের মধ্যে মানুষের উপকার করছি। এটাই আমার সান্ত্বনা।’

জুয়েলের বাড়ি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাঁশ ইউনিয়নের আরিফপুর গ্রামে। তিনি আরও বলেন, ‘দুই বছর আগে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে অটোরিকশা কিনি। এরপর আরও এক লাখ টাকা খরচা করে এটি যাতায়াতের উপযোগী করে তুলি। পরে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সবুজ ঘাস লাগিয়ে আরও ২০ হাজার টাকা ব্যয় করি। অন্য বাহনের চেয়ে এটি আলাদা, সেটা দেখানোর জন্য অভিনব এ আয়োজন। প্রতিদিন বহু যাত্রীকে এভাবে পার করি।’

জুয়েলের বাবা খোরশেদ আলম বলেন, ‘ছেলের এই মানবিক উদ্যোগ অন্যদের মতো আমাকেও মুগ্ধ করেছে। আমার গর্ব হয়।’