Thank you for trying Sticky AMP!!

'সেমাই-চিনি কই পামু, আমগরে ঈদ নেই'

বন্যাদুর্গত এলাকায় ঈদের আনন্দ নেই। ছবিটি আজ শনিবার সকালে জামালপুর শহর রক্ষা বাঁধ থেকে তোলা। ছবি: আব্দুল আজিজ

জামালপুরে বানের পানির সঙ্গে ভেসে গেছে ঈদ আনন্দ। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে বন্যাদুর্গত জামালপুর শহর রক্ষা বাঁধে মালা বেগমের সঙ্গে দেখা হয়। তাঁর বাড়ি শেরপুরের কুলুরচর এলাকায়। তিনি দেড় মাস ধরে জামালপুর শহর রক্ষা বাঁধে পরিবার নিয়ে ছাপরা তুলে বসবাস করছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাতে টাকা নাই। মেয়ের বাপ কত দিন ধরে বেকার। সেমাই-চিনি কই পামু। আমগরে ঈদ নেই। মেয়েটাকে একটু সেমাইও খাওয়াতে পারলাম না। গোশত-পোলাও তো দূরের কথা।’

ব্রহ্মপুত্র নদের পানিতে জামালপুর শহরের নাওভাঙা চর ও শেরপুর জেলার কুলুর চর গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার জামালপুর শহর রক্ষা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। তারা প্রায় দেড় মাস ধরে ছোট ছোট ছাপরা তুলে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে জীবন যাপন করছে। এসব মানুষের মধ্যে কোনো ধরনের ঈদের আনন্দ নেই। বেশির ভাগ পরিবার সকালে ঠান্ডা ভাত খেয়েছে। অনেক পরিবারের চুলা পর্যন্ত জ্বলেনি। আশ্রয় নেওয়া পরিবারের কোনো শিশুর গায়ে নতুন জামা-কাপড় নেই। বাঁধের প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত এসব বন্যার্ত মানুষ বসবাস করছে।

শিশু সুখ তারা ও আলো আক্তার দুই বোন। তারা দুই বোন তাঁদের বাবা-মার সঙ্গে বাঁধের ওপর প্রায় এক মাস ধরে আছে। ঈদের দিনও বেলা ১১টা পর্যন্ত তাদের দুই বোনের খাবার জোটেনি। দুজনে মিলে একটি চুলার মধ্যে ভাত রান্নার চেষ্টা করছে। সুখ তারার এক বছরের বড় আলো আক্তার। আলো আক্তার প্রথম আলোকে বলে, ‘খাবারই নাই। তিন বেলা খেতেই পারি না। আমাদের আবার ঈদ কিসের? আজ ঈদের দিন, তার পরও খেতে পারি নাই। কোথায় পাব নতুন-জামা কাপড়? আমগরে মতো সবারই এই অবস্থা।’

জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বন্যার্ত মানুষের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। বেলা তিনটার দিকে জামালপুর শহর রক্ষা বাঁধের ওপর আশ্রয় নেওয়া বন্যার্ত মানুষের মাঝে সেমাই, চিনি ও দুধ বিতরণ করা হয়।