Thank you for trying Sticky AMP!!

আমলাতন্ত্র জনগণের প্রভু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে: বদিউল আলম মজুমদার

সিলেটে নাগরিক সংলাপে বক্তব্য দিচ্ছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। সোমবার নগরের একটি রেস্তোরাঁয়

বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র জনগণের সেবক থেকে জনগণের প্রভু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। একটি দেশ, একটি পতাকা পেয়েছি। কিন্তু আমরা মুক্তি পাইনি। ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারী হিসেবে আমাদের জেগে উঠতে হবে।’

সোমবার বিকেলে সিলেটে এক নাগরিক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সুজন সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে নগরের ধোপাদীঘির পার এলাকার একটি রেস্তোরাঁর সভাকক্ষে এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।

‘কেবল অর্থনৈতিক সংস্কার নয়, সংকট সমাধানে প্রয়োজন রাজনৈতিক সংস্কার’ শীর্ষক সংলাপে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সংস্কার জরুরি। রাজনৈতিক সংস্কার না করে অর্থনৈতিক সংস্কার হবে ফুটো কলসিতে পানি ঢালার মতো। সুজন মনে করছে, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না করে, মানুষের ভোটের অধিকার ও বাক্‌স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা না করে অর্থনৈতিক সংস্কার কোনো কাজে আসবে না। দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ও লুটপাটের লাগাম টেনে ধরে মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারলে অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের পাশাপাশি রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হবে।

২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একতরফা ও ব্যর্থ দুটি নির্বাচনের কারণে সরকার আর জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়। প্রতি পাঁচ বছর পর ক্ষমতাসীনদের আর জনগণের কাছে ভোটের জন্য যেতে হয় না। তাই সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ করা দায় মনে করছে না। যারা ক্ষমতায় এনেছে ও টিকিয়ে রেখেছে, সরকার তাদের সন্তুষ্ট রাখতে ব্যস্ত।

দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন হলে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেই দলের হয়ে কাজ করে বলে মনে করেন সুজন সম্পাদক। তিনি বলেন, যেভাবে নির্বাচন হলে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো দলের হয়ে কাজ করবে না, এ জন্য সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

রাষ্ট্রযন্ত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও জনগণের অংশগ্রহণ নেই মন্তব্য করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দেশে মানবাধিকার ও আইনের শাসনের অভাব রয়েছে। এই সুযোগে সরকারের আশীর্বাদপুষ্টরা যে যেখানে পারছে, গোষ্ঠীতন্ত্র কায়েম করে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার করেও তারা বহাল তবিয়তে রয়েছে।

পাতানো সংসদ ও পাতানো বিরোধী দল দিয়ে দেশ পরিচালনা করা যায় না বলে মনে করেন সুজন সম্পাদক। তিনি বলেন, এটা প্রমাণিত যে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। দেশে এ পর্যন্ত ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে চারটি হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন। এই চারটি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য। বাকিগুলো নিয়ে দেশ-বিদেশে অনেক প্রশ্ন আছে।

সুজন সিলেট জেলা শাখার সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সম্পাদক শাহ শাহেদার সঞ্চালনায় নাগরিক সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে সহসভাপতি ইকবাল ছিদ্দিকী, সৈয়দা শিরীন আকতার, অধ্যাপক তাহমিনা ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।