Thank you for trying Sticky AMP!!

জাপা প্রার্থীর বিশ্বাস, ইভিএমে কারচুপি হয়েছে; উন্নয়নের প্রতিফলন দেখছেন আ.লীগ প্রার্থী

গাইবান্ধা–৫ আসনের উপনির্বাচনে জাপা মনোনীত প্রার্থী এ এইচ এম গোলাম শহীদ

গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনের (পুনর্ঘোষিত) ফলাফল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান (রিপন) ও জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী এ এইচ এম গোলাম শহীদ। জাপা প্রার্থীর অভিযোগ, ইভিএমে কারচুপি, দলীয় লোকজনের বিরুদ্ধে হামলা, ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারণে জাপার পরাজয় ঘটে। জয়ী মাহমুদ হাসান বলছেন, নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের প্রতিফলন ঘটেছে। সর্বমহলে প্রশংসিত এই নির্বাচন ইতিহাস হয়ে থাকবে।

আলোচিত গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের (পুনর্ঘোষিত) উপনির্বাচন গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান নৌকা প্রতীকে ৭৬ হাজার ১৫ ভোট পান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম শহীদ (লাঙ্গল) পেয়েছেন ৪৩ হাজার ৯৫৯ ভোট। উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বাকি তিন প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। তাঁরা হলেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মো. মাহবুবুর রহমান ও নাহিদুজ্জামান নিশাদ। এর মধ্যে ভোটের কয়েক দিন আগে উপনির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন নাহিদুজ্জামান।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাইবান্ধা-৫ আসনে ১৯৭৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের মোট ১১টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে পাঁচবার জাতীয় পার্টি, চারবার আওয়ামী লীগ ও দুবার বিএনপি জয়ী হয়।

Also Read: গাইবান্ধা–৫ আসনে বেসরকারিভাবে জয়ী নৌকার মাহমুদ হাসান

নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে জানতে চাইলে জাপা প্রার্থী গোলাম শহীদ প্রথম আলোকে বলেন, ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হচ্ছে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটেনি। না ঘটার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। বিশেষত ইউভিএম বা প্রযুক্তির কাছে তাঁরা হেরেছেন। ইভিএমের প্রতি তাঁদের আস্থা নেই, শুরু থেকে তাঁরা তা বলে আসছেন। ইভিএমে কারচুপি হয়েছে বলে তাঁর বিশ্বাস।

গোলাম শহীদ বলেন, ‘১২ অক্টোবরের ভোটে যে অনিয়ম এবং আমাদের লোকজনের বিরুদ্ধে হামলা, মামলা থেকে শুরু করে যা যা ঘটছে, যার ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ কারণে আমাদের লোকজন বুধবারের উপনির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে কম গেছে। তারা ওই ভয়টা আবার নতুন করে দেখাতে থাকে যে নৌকা ছাড়া কেউ ভোটকেন্দ্রে যাবে না। একাধিক কেন্দ্রে আমাদের লোকজনকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। এজেন্টও বের করে দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু কেন্দ্র তারা পুরোটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাদের ইচ্ছেমতো ভোটের রেজাল্ট করে নেয়। নেতা–কর্মীদের অনেকে ভয়ে ভোটকেন্দ্র যেতে পারেনি। ফলে জাপার পরাজয় ঘটেছে।’

মাহমুদ হাসান

জাপা প্রার্থীর এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাহমুদ হাসান। তিনি বলেন, পুনর্ঘোষিত উপনির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। সর্বাত্মকভাবে সবাই সহযোগিতা করেছেন। সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। এই নির্বাচন ইতিহাস হয়ে থাকবে।

নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মাহমুদ হাসান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি সাঘাটা-ফুলছড়ির মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। দুই উপজেলার উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই জনগণের উন্নয়নে কাজ করছি। নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিটি ইউনিয়নে, গ্রামে ও প্রতিটি ঘরে ঘরে সাধারণ ভোটারের কাছে গিয়েছি। তাঁদের মন জয় করার চেষ্টা করেছি। এ কারণে নৌকার মার্কার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের ভেতর দিয়ে নৌকা মার্কার বিজয় তা প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি জনপ্রিয় দল। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের প্রতিফলন ঘটেছে এই নির্বাচনে।’

Also Read: আ.লীগ-জাপা ছাড়া সব প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

এই আসন থেকে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদের ডেপুটি স্পিকার মনোনীত হন ফজলে রাব্বী মিয়া। গত বছরের ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে ১২ অক্টোবর উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

১২ অক্টোবর ভোট গ্রহণের মাঝপথে নির্বাচন বন্ধ করে দেয় ইসি। ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মোট পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে চারজন ভোট বর্জন করেন। এরপর সিসিটিভি ক্যামেরায় অনিয়ম দেখে সিইসি প্রথমে ৫১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত এবং পরে উপনির্বাচন বন্ধ করেন।

অনিয়মের তদন্তে পরদিন ১৩ অক্টোবর ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর আবার ৪ জানুয়ারি উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।

Also Read: গাইবান্ধায় সুষ্ঠু ভোট হয়েছে: সিইসি