Thank you for trying Sticky AMP!!

নীলফামারীতে আবারও জেঁকে বসেছে শীত, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

সৈয়দপুরে শনিবার সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। শীতের তীব্রতা বেশি থাকায় উপজেলা শহরে লোকজনের চলাচল কম

নীলফামারীতে আবারও জেঁকে বসেছে শীত। কয়েক দিনের ঝলমলে রোদের তাপে শীতের তীব্রতা কিছুটা কমলেও আজ শনিবার সকাল থেকে ঘন কুয়াশার ঢাকা গোটা জেলা। সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত কোথাও সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশার কারণে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। জেলার মধ্যে সৈয়দপুর উপজেলায় ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষ বলেন, আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলেও বিমান চলাচল করেছে। কোনো ফ্লাইট বাতিল হয়নি।

নীলফামারীর তরুণ কৃষিশ্রমিক বুলবুল ইসলাম বলেন, ‘ঠান্ডাত হাত–পাও নাগি যায়ছে, কাম করা যায়ছে না। আধেক (অর্ধেক) দিন কাম করি তিন–চাইরশ টাকা পামো। তাতে চলে না। কাম না করি বুদ্ধি নাই।’

কনকনে শীতের কারণে বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর ও কৃষি শ্রমিকেরা। সারা দিন মাঠঘাটে কৃষি শ্রমিকদের উপস্থিতি ছিল কম। শনিবার দুপুরে নীলফামারী জেলা সদরের ইটাখোলা, টুপামারী, রামনগর ও পলাশবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে শীতের প্রকোপ লক্ষ করা যায়।

সৈয়দপুর আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম বলেন, গতকাল শুক্রবার রাত থেকে ঘন কুয়াশায় ছেয়ে আছে এই অঞ্চল। সৈয়দপুরে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। তাপমাত্রা না কমলেও মৃদু বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দর এলাকায় সকালে দৃষ্টিসীমা (ভিজিবিলিটি) ছিল মাত্র ২০০ মিটার। বিমান চলাচলে প্রয়োজন হয় কমপক্ষে ২ হাজার ভিজিবিলিটি। ফলে উড়োজাহাজ অবতরণ ও উড্ডয়নে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। অবশ্য দুপুরের পর আবহাওয়ার উন্নতি হলে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এদিকে দুপুরে নীলফামারীর ইটাখোলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া গ্রামে দেখা যায়, নয়জন কৃষি শ্রমিক দলবদ্ধ হয়ে বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন। এ সময় কথা হলে তাঁরা জানান, জীবিকার তাগিদে কনকনে শীত উপেক্ষা করেই তাঁদের কাজ করতে হচ্ছে। ইটাখোলা ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া গ্রামের যুবক সাফিউল ইসলাম বলেন, ‘একমাস থাকি ঠান্ডা চলেছে। কয়দিন এনা রোদ উঠিল তাতে কামকাইজ করা গেছিলো। আইজ বেলা উঠেছে না। ঠান্ডার জইন্য পানিত থাকা যায়ছে না। দুইটা বাইজতে কাম শ্যাষ করির নাইগবে।’

মিলন ইসলাম (৩০) বলেন, ‘দুই দিন থাকি এনা রোদ উঠিল তাতে ঠান্ডা কম নাইগছে। আইজ রোদের দেখায় নাই।’

তিনজন কৃষি শ্রমিক নিয়ে রামনগর ইউনিয়নের দোয়ানী পাড়া গ্রামে নিজের জমিতে বোরো চারা রোপণ করছিলেন এনামুর রহমান (৪০)। তিনি বলেন, ‘এখন হামার বোরো ধান গাড়ির সময় পার হছে, কিন্তু শীত কমেছে না। বিচনের (বীজতলার) বয়স বাড়েছে। বিচনের বয়স ৫২ দিন পার হইছে। এই জন্য ঠান্ডাতে কাম করির নাগেছে। দেড়ি কইরলে ধান হইবে না।’

সৈয়দপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সৈয়দপুরে তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবারে ছিল ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ দুই দিন তাপমাত্রা কম থাকলেও রোদের কারণে শীত কম অনুভূত হয়। শনিবার ঘন কুয়াশা থাকায় ও রোদ না থাকায় শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে।