Thank you for trying Sticky AMP!!

যশোরে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি, বাড়ছে ব্যয়

২০১৬ সালে ভৈরব নদের তীরে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। জুন মাসে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

যশোর শহরের ভৈরব নদের তীরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ যথাসময়ে শেষ হয়নি। গত সোমবার তোলা ছবি

মেয়াদ শেষ হলেও যশোর শহরে ভৈরব নদের তীরে দেড় কিলোমিটার সৌন্দর্যবর্ধনের সাড়ে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার আরও এক কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় বাড়ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) যশোর কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে পাঁচ বছর মেয়াদি ‘ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প’–এর কাজ শুরু হয়। এ কাজের জন্য ২৭২ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। ভৈরব নদের ৯২ কিলোমিটার খনন প্রকল্পের সঙ্গে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য পরে আরও সাড়ে ১৩ কোটি টাকার প্রকল্পটি সংযুক্ত করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ দুই দফা বাড়িয়েও কাজ শেষ করতে পারেনি পাউবো। এর মধ্যে খনন প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শেষ না হওয়ায় নদে পানির প্রবাহ নেই। ফলে ভৈরব নদে নৌযান চলাচলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না।

ভৈরব বাঁচাও আন্দোলন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ভৈরব নদ সংস্কারের প্রথম থেকেই স্বেচ্ছাচারিতা চলছে। নদ খননকাজ শেষ হলেও দুই ধারের দখলদারেরা রয়ে গেছেন। নদের প্লাবন ভূমি রক্ষা না করে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হচ্ছে। সৌন্দর্যবর্ধনের নকশা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

পাউবোর যশোর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরের প্রাণকেন্দ্র ভৈরব নদের ডান তীরে ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০ মিটার এলাকা সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের অধীন নদের তীরে ছোটখাটো অনুষ্ঠান করার জন্য উন্মুক্ত মঞ্চ, দুটি পানির ফোয়ারা, ফুলের বাগান, শৌচাগার, হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে), মাতৃদুগ্ধ পান করানো কর্নার ও প্রতিবন্ধীদের জন্যে বিশেষ কর্নার নির্মাণের কথা রয়েছে। এ ছাড়া গরীবশাহ মাজারের পাশ থেকে বাবলাতলা সেতু পর্যন্ত এক কিলোমিটার হাঁটার পথ ও পয়োনিষ্কাশনের পাকা নালা নির্মাণকাজের জন্য সাড়ে ৪ কোটি এবং ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ভৈরব নদের নীলগঞ্জ সেতু থেকে মহাশ্মশান পর্যন্ত ৩০০ মিটার রেলিংসহ হাঁটার পথ নির্মাণের কাজ চলছে।

ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তিনটি গুচ্ছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় সাড়ে ১৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের ঠিকাদার হিসেবে মেসার্স নূর হোসেন অ্যান্ড মেসার্স শামীম চাকলাদার জেভি (জয়েন্ট ভেঞ্জার) নামের প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।

গত রোববার সরেজমিন দেখা গেছে, ভৈরব নদের তীরে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। নদের দড়াটানা অংশে কংক্রিটের ব্লক দিয়ে নদের তীরের মাটি বাঁধাই করা হয়েছে। হাঁটার জন্য কংক্রিটের ঢালাইয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একজন অভিযোগ করে বলেন, জুন মাসে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজের ধীরগতির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়নি। এ কারণে নির্মাণ ব্যয় বাড়ছে।

এ বিষয়ে পাউবো যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিক সংকট; কয়েক দফায় নকশা সংশোধনসহ বিভিন্ন কারণে কাজ শেষ করা যায়নি। তবে প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসেই এই প্রকল্প যশোরবাসীর জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’ প্রকল্পে ব্যয় বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, স্থাপনার গেট নির্মাণের ব্যয় ধরা ছিল না। গেট নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্যে এক কোটি টাকা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে।