Thank you for trying Sticky AMP!!

সিলেটের অপরাজেয় পাঁচ কাউন্সিলর

ছবি: সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত (বাঁ থেকে), ২০ নম্বর ওয়ার্ডের আজাদুর রহমান, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফরহাদ চৌধুরী, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সিকন্দর আলী ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মখলিছুর রহমান

সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত পাঁচবার নির্বাচন হয়েছে। প্রতিটি নির্বাচনেই জয় পেয়েছেন পাঁচজন কাউন্সিলর। ‘উন্নয়নবান্ধব ও জনদরদি’ হওয়ার কারণেই তাঁরা টানা পাঁচবার নির্বাচিত হয়েছেন বলে স্থানীয় ভোটারেরা জানিয়েছেন।

নির্বাচিত এসব কাউন্সিলররা হলেন ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ফরহাদ চৌধুরী, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মো. মখলিছুর রহমান, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে মো. সিকন্দর আলী, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে শান্তনু দত্ত ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডে আজাদুর রহমান। এর মধ্যে ফরহাদ চৌধুরী বিএনপিপন্থী, বাকিরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

৬ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পাওয়া ফরহাদ চৌধুরী মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচন করায় সম্প্রতি তাঁকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। টানা জয় সম্পর্কে ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘জনগণের জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি সেবক, শাসক নই। আমি সাদাকে সাদা বলি, কালোকে কালো বলি। ওয়ার্ডবাসীর সঙ্গে সুখে-দুঃখে ওতপ্রোতভাবে আছি বলেই তাঁরা বারবার আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন।’

মো. মখলিছুর রহমান মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচিত এ কাউন্সিলর বলেন, ‘ওয়ার্ডবাসীর ভালোবাসাই এ জয়ের মূল রহস্য। উন্নয়ন ও ওয়ার্ডের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থেই ওয়ার্ডবাসী যোগ্য নেতৃত্ব বেছে নিয়েছেন।’

১২ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পাওয়া মো. সিকন্দর আলী আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত। তিনি বলেন, ‘জনগণ আমাদের কাজ ভালো দেখেছেন ও তাঁদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ভালো দেখেছেন বলেই আমাদের বারবার ভোট দিয়েছেন। ওয়ার্ডের জনগণ যেন ভালো থাকে, সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা সব সময় করেছি। মসজিদ-মন্দির, স্কুল-মাদ্রাসার উন্নয়নে সমানতালে কাজ করেছি। এটাই টানা জয় পাওয়ার মূল কারণ।’

১৩ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচিত শান্তনু দত্ত সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি টানা ছয়বার এই ওয়ার্ডে নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার আগে সর্বশেষ সিলেট পৌরসভার কমিশনারও ছিলেন তিনি। বর্তমান সিটি করপোরেশন পরিষদে তিনিই টানা সবচেয়ে বেশি জয়ী জনপ্রতিনিধি। জয়ে ডাবল হ্যাটট্রিক করা শান্তনু দত্ত বলেন, ‘আমি জনবান্ধব ছিলাম বলেই ভোটারেরা টানা ছয়বার আমাকে নির্বাচিত করেছেন।’

২০ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচিত কাউন্সিলর আজাদুর রহমান মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভোটারেরা আমাদের মায়া করেন বলেই টানা পাঁচবার কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছেন। জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের জন্য কাজ করেছি। আমাদের একটা রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মেলবন্ধনের সংস্কৃতি আছে। ক্রীড়া, সংস্কৃতি, সমাজসহ নানা কাজে আমি নিরন্তর কাজ করেছি। এর মূল্যায়নও ওয়ার্ডবাসী করেছেন। তাই ওয়ার্ডবাসীর কাছে আমার কৃতজ্ঞতারও শেষ নেই।’

এর আগে গত বুধবার সিলেট সিটি করপোরেশনে পঞ্চমবারের মতো ভোট গ্রহণ হয়। নগরের ৪২টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এখানে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর পদে ৩৫৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

পাঁচজন কাউন্সিলরের টানা পাঁচবার জয় পাওয়ার বিষয়টি তাঁদের জনসম্পৃক্ততার বিষয়টিকে নির্দেশ করে বলে মন্তব্য করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁরা (নির্বাচিত পাঁচ কাউন্সিলর) জনসম্পৃক্ত ছিলেন বলেই জয় পেয়েছেন। অন্য কাউন্সিলররাও এটি অনুসরণ করতে পারেন। মোট কথা, মানুষের সুখ-দুঃখে আন্তরিকভাবে পাশে থাকতে হবে। তাহলেও জনগণও ভালোবাসার প্রতিদানে ভালোবাসাই ফিরিয়ে দেবে।’